কাজ করেন সিইপিজেডের জেড অ্যান্ড জেড গার্মেন্টস কোম্পানিতে অ্যাডমিন অফিসার হিসেবে। কিন্তু পরিচয় দেন রেডিসন ব্লুর জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে। আর এর আড়ালে করেন ইয়াবা পাচার ও ব্যবসা। তার নাম শাহরিয়ার পারভেজ ওরফে বাপ্পী।
বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাপ্পিসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীকে ১৯ হাজার ৪০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করে র্যাব। এরপরই বেরিয়ে আসে এমন তথ্য।
শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় র্যাবের মিডিয়া উইং এর এএসপি মিজানুর রহমান এ সব কথা জানান। তিনি জানান, ডিএমপি ঢাকার বিমানবন্দর থানাধীন বিমানবন্দর মহাসড়কে অবস্থিত বিমানবন্দর ফুটওভার ব্রীজের নিচ থেকে মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশে অবস্থান করা ৪ জনকে ১৯ হাজার ৪০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ হাতে-নাতে গ্রেফতার করে র্যাব ১।
এ সময় তাদের কাছ থেবে মাদকদ্রব্য ইয়াবা ক্রয় বিক্রয়ের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্রান্ডের ৯ (নয়) টি মোবাইল ফোন ও মাদকদ্রব্য ইয়াবা বিক্রয়ের নগদ ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক বাজার মূল্য ৯৭ লাখ টাকা।
আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীরা হচ্ছে, শাহরিয়ার পারভেজ ওরফে বাপ্পী (৪২), জাহাঙ্গীর আলম (৩২), নেপাল পাল (৪৫), হাবিব বেপারী (৩০)। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহরিয়ার পারভেজ জানান, ১৯৯৭ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে স্নাতক পাস করে। তারপর সে কুমিল্লার কান্দিরপাড় আমানিয়া মার্কেটে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করে। কাপড়ের ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হলে ২০০৭ সালে সে ব্যাংককে চলে যায় এবং সেখানে ২০১০ সাল পর্যন্ত অবস্থান করে। ২০১৩ সালে সে জীবিকা নির্বাহের জন্য কাতারে চলে যায় এবং ২০১৭ সালে দেশে ফিরে আসে। দেশে আসার পরই সে মাদকে আসক্ত হয়ে
পড়ে। সে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে কক্সবাজারের জনৈক কামরুল এর মাধ্যমে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। সে নিজেকে হোটেল রেডিসন ব্লুর এর জিএম বলে মিথ্যা পরিচয় দিতো এবং সপ্তাহে তিন চার বার বিভিন্ন বিমানের বিজনেস ক্লাসে কক্সবাজার থেকে ঢাকা যাতায়াত করতো। প্রতিবার আগমনের সময় ১০ থেকে ২০ হাজার ইয়াবা তার কোমরের মধ্যে নিয়ে আসতো বলে সে জানায়। এভাবে সে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার হতে অসংখ্য ইয়াবার চালান ঢাকায় নিয়ে এসেছে বলে জানায়। ঢাকায় ইয়াবা আনার পর সে বাড্ডার সুমন, নুরেরচালার টিপু, ঢাকার জাহাঙ্গীরআলম ও রাজশাহীর আলমের নিকট হস্তান্তর করতো সে।
আরেক আসামি জাহাঙ্গীর আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ঢাকার মিরপুরে তার জেরিন মাল্টিমিডিয়া নামক একটি দোকান রয়েছে। সে রাজশাহীর আলমের মাধ্যমে গত ৬ মাস আগে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। জাহাঙ্গীর আলম একজন বড় মাপের ইয়াবা ব্যবসায়ী এবং শাহরিয়ার পারভেজের ইয়াবা চালানের মূল ক্রেতা হাবিব তার সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। আসামি হাবিব বেপারী পেশায় একজন প্রাইভেটকার চালক। গত ১০ বছর ধরে ঢাকা শহরে প্রাইভেটকার চালায়। সে জাহাঙ্গীর এর মাধ্যমে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে বলে জানায়।
গ্রেফতারকৃত আসামি নেপাল পাল পেশায় একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। পুরান ঢাকার তাতীবাজারে তার স্বর্ণের দোকান রয়েছে। গত ২ বছর ধরে ইয়াবায় আসক্ত হয়ে সে পরবর্তীতে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ে। সে শাহরিয়ার কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে পাইকারি ও খুচরা উভয় প্রক্রিয়ায় বিক্রয় করে থাকে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply