ভাতিজা নিখোঁজ হওয়ার পর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন জেঠা জামাল উদ্দিন। সেই জেঠাই ছোট ভাইয়ের ছেলেকে হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকে ভরে রাখেন। মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও উত্তর ইউনিয়নের ঘোনা গ্রামে এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে। রবিবার রাত আনুমানিক ২টা ৩০ মিনিটে একই গ্রামের তাজুল ইসলামের সেপটিক ট্যাংক থেকে মাহিবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত মাহিবের জেঠা মো. জামাল ও প্রতিবেশী মো. সজীবকে আটক করা হয়েছে।
লাশ উদ্ধারের সময় সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল (মতলব) রাজন কুমার দাস, মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএমএস ইকবাল, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ইব্রাহীম খলিল, এসআই মো. রুহুল আমিন উপস্থিত ছিলেন।
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ৩ ডিসেম্বর নিখোঁজের দিন জেঠা জামাল উদ্দিন শিশু মাহিবকে স্কুলের পাশের নিজের দোকানে ডেকে নেয় এবং কৌশলে সেখান থেকে সরিয়ে ফেলে। পরে নিজেই বাদী হয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। পুলিশ তার মোবাইল নাম্বার ট্র্যাকিং করে জামালকে আটক করে। তার কাছ থেকে মোবাইল কল লিস্ট ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক সময় সে মাহিবকে হত্যা করে টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে রেখে দেয় বলে পুলিশকে জানায়।
এদিকে এলাকাবাসী শিশু মাহিবের হত্যাকারী তার জেঠা জামাল উদ্দিনের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। বিক্ষুব্ধ জনতা জামালের দোকান ভাঙচুর করেছে। এ সময় তার দোকান ঘর দেশীয় রাইফেল উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশের ধারণা, মাহিবের বাবা প্রবাসী ও মা শিক্ষিকা হওয়ায় তাদের টাকা পয়সার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে তার জামাল এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
মাহিবের মা শাহিনা আক্তার জানান, মাহিবকে তার জেঠা মো. জামাল হোসেন হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রেখেছে। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।
মতলব দক্ষিণ থানার এসআই মো. রুহুল আমিন জানান, মাহিবের ব্যবহৃত জুতা সেপটিক ট্যাংক থেকে ২০০ গজ দূরে পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে মতলব দক্ষিণ থানায় একটি মামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ওই এলাকার প্রধানীয়া বাড়ির প্রবাসী মাসুদ রানা ও ঘোনা ওয়াসিম উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাহিনা আক্তারের ছেলে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিব (৭) গত ৩ ডিসেম্বর পরীক্ষা শেষে স্কুলের পাশের এক বাড়িতে খেলা করছিল। তার মা স্কুল শেষে বাড়ি ফিরার সময় ওই বাড়িতে না পেয়ে চলে আসে। বাড়িতে এসেও ছেলের কোন খোঁজ না পেয়ে চারদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। কিন্তু কোথাও তার খোঁজ না পেয়ে পরের দিন ৪ ডিসেম্বর মাহিবের জেঠা মতলব দক্ষিণ থানায় একটি হারানো ডায়রি করেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডিঃ/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply