নওগাঁর আত্রাইয়ে কৃষকেরা আমন ধান ঘরে তুলে এখন ৮ ইউনিয়নের আলু চাষিরা উচুঁ ও ডাঙ্গা সব জমিতেই আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আগাম জাতের আলু চাষে লাভ হওয়ায় কৃষকরা কোমড় বেঁধে নেমে পড়েছে। কেউ জমি তৈরি করছেন কেউবা শ্রমিক নিয়ে ক্ষেতে আলু লাগাচ্ছেন। প্রতি বছর আগাম জাতের আলু চাষ করে লাভবান হওয়ায় গত বছরের তুলনায় বেশি জমিতে আলু চাষ করছে উপজেলার কৃষকেরা। কিছু দিন আগে যে জমির ধান কেটে ঘরে তুলেছে প্রান্তিক কৃষক, সেই জমিতেই এখন আগাম আলুর বীজ বোপনে ব্যস্ত তারা।
আত্রাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুক’লে থাকার কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রত্যেকটি কৃষক আলু চাষ করে অধিক মুনাফা লাভ করতে পারবে। গত বছর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ২৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়। এবার গত বছরের তুলনায় উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের জমিতে বেশি পরিমান আগাম আলু উৎপাদন হবে বলে মনে করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ। এ বছর আবহওয়া ভালো থাকায় এবং আলুর বীজ ভালো পাওয়ায় খুশি মনে আলু চাষে ঝেঁকে পড়েছে উপজেলার কৃষক।
উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের কৃষক আজাদ সরদার জানান, এবার ১২-১৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করবো। হিমাগারে বীজ রেখে বীজের মান ভালো পেয়েছি। আমার বীজের কোন সমস্যা নেই। জমিতে প্রতিদিন ১০-১২ জন কৃষক আলুর জমি তৈরির কাজ করছে। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে গত বছরের তুলনায় এবার বেশি লাভের আশা করছি।
উপজেলার মিরাপুর গ্রামের মোঃ মুমিন প্রাং জানান, গত বছর রাজনৈতিক অস্থিরতার কবলে পড়ে প্রায় দুই লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এবার আশা করছি কোন ধরনের সমস্যা না হলে আলুতে খরচের চেয়ে দ্বিগুন লাভ হবে।
আলুর বীজের ক্ষতি সম্পর্কে উপজেলার মাগুড়াপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি হিমাগারে বীজের জন্য আলু রেখেছিলাম আল্লাহর রহমতে আমার বীজের কোন পচন সমস্যা দেখা দেয়নি এবং আলুর বীজ ভালো অবস্থায় পেয়েছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের অধিক পরিমান বীজ হিমাগারে রাখতে হয়। কিন্তু আত্রাই উপজেলায় কোন হিমাগার না থাকায় আমাদের প্রতিবছর ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাই আত্রাই উপজেলায় ১টি হিমাগার হলে আলু সংরক্ষণে কৃষকরা আলু চাষ করে স্বস্তি পেত। অপরদিকে আলু চাষের জন্য উপজেলার কৃষি বিভাগ থেকে যথেষ্ট পরিমান সহযোগিতা ও পরার্মশ দেওয়ার জন্য প্রতিদিন উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে উপজেলা সহকারী কর্মকর্তারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষি পরার্মশ দিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম কাউছার জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রত্যেকটি কৃষক আলু চাষ করে অধিক মুনাফা লাভ করতে পারবে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে আত্রাই উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। শুধু তাই নয় আলু চাষের জমিগুলো উর্ব্বরতা বেশি থাকায় কৃষকরা ইরি-বোরো চাষেও এর সুফল পাবে। উপজেলার আলু চাষিরা যেভাবে আলু চাষে ঝুঁকে পড়েছে তাতে নওগাঁ জেলার মানুষের আলুর চাহিদা পূরণ করেও দেশের বিভিন্ন জেলায় কয়েক হাজার টন আলু রফতানি করতে পারবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডিঃ / কাউসার।
Leave a Reply