লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে মসজিদের দ্বিতল ভবনের নির্মাণ কাজে বাঁধা দিয়েছে ভারতীয় সী’মান্তর’ক্ষী বাহিনী (বি’এস’এফ)। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার বড়খাতা দোলাপাড়া সী’মান্তে কেরামতিয়া বড় মসজিদের জানালার কাজে বাঁ’ধা দেন ভারতের শিতলকুচি থানার অমিত ক্যাম্পের বি’এস’এফ’র টহল দল।এ ঘটনায় বাংলাদেশী লোকজনসহ ওই মসজিদের নামাজ পড়তে আসা মুসল্লীদের মাঝে চরম ক্ষো’ভ দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের দোলাপাড়া সীমান্ত এলাকায় মুঘল আমলে কেরামতিয়া হজুর নামে এক দরবেশ বসবাস করতেন। তার সহযোগিতায় ওই সময়ে সেখানে একটি ছোট মসজিদও নির্মাণ করা হয়। মৃ’ত্যুর পর মসজিদের পাশেই তার সমাধি দেয়া হয়েছে। পরে টিনশেট করে একটি বড় আকারের মসজিদ নির্মাণ হয়।১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় মসজিদ ও মাজারটি জিরোপয়েন্টে পড়ে যায়। কেরামতিয়া হুজুরের মাজার ও মুঘল আমলের মসজিদকে কেন্দ্র করে প্রতি শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নারী ও পুরুষ নানা নিয়তে নামাজ পড়তে আসে। স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় মসজিদটি পুণঃ নির্মাণের কাজ শুরু হলে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইনের অযুহাতে মসজিদ নির্মাণে বাঁ’ধা দেয় ভারতীয় বি’এস’এফ।
২০১১ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের উচ্চ পর্যায়ে মসজিদের নকশা অনুমোদন হওয়ার পর ওই বছরের ২৯ এপ্রিল দ্বিতল মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে এ মসজিদ নির্মাণের কাজ এখনো চলছে।কয়েক দিন ধরে মসজিদের দ্বিতল ভবনের জানালায় গ্লাস লাগানো হচ্ছিলো। কিন্তু শুক্রবার দুপুরে হঠাৎ করে ভারতীয় সী’মান্ত র’ক্ষি বা’হিনী (বি’এস’এফ) বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।
ওই মসজিদে নামাজ পড়তে আসা শহিদার রহমান (৫৫) জানান, জন্মের পর থেকেই দেখছি কেরামতিয়া হুজুরের মাজার ও মসজিদকে ঘিরে এখানে প্রতি শুক্রবার হাজার হাজার নারী ও পুরুষ আলদা আলদা ভাবে নামাজে সমাবেত হয়। কিন্তু দুই দেশের রাষ্ট্র পর্যায়ে নকশা অনুমোদন হওয়ার পরও শুক্রবার নিজে দেখলাম, ভারতীয় বি’এস’এফ বাংলাদেশে প্রবেশ করে নির্মাণ কাজে বাঁ’ধা দিচ্ছে। ফলে নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় আমাদের নামাজ পড়তে সমস্যা হচ্ছে।
ওই মসজিদ কমিটি’র সম্পাদক আলিমুদ্দিন জানান, দুই দেশের মধ্যে নকশা অনুমোদন হওয়ার পর আমরা মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু করি। কিন্তু প্রায় সময় ভা’রতীয় বি’এস’এফ নানা অযুহাতে নির্মাণ কাজে বাঁ’ধা দেয়। জানালায় রঙ্গিন গ্লাস লাগাতে বাঁ’ধা দিলে আমরা সাদা গ্লাস লাগাতে শুরু করি। কিন্তু শুক্রবার সেই গ্লাস লাগাতেও বাঁ’ধা দেয়া হয়। প্রতি শুক্রবার এ মসজিদের দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নারী পুরুষ বিভিন্ন নিয়তে নামাজ পড়তে আসে।
৬১-ব’র্ডার গা’র্ড বাংলাদেশ বি’জি’বি’র বড়খাতা কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার ইব্রাহিম মোল্লা জানান, ভার’তীয় বি’এস’এফ মসজিদের নির্মাণ কাজে বাঁ’ধা দিলেও নির্মাণ কাজ বন্ধ নেই। ভা’রতীয় বি’এস’এফ আমাদের সাথে নিয়ে মসজিদের নির্মাণ কাজ ঘুরে দেখেছেন। এখন নির্মাণ কাজ চলছে পাশাপাশি এ বিষয়ে বি’এস’এফ’র সাথে আলোচনাও হচ্ছে।
৬১-ব’র্ডার গা’র্ড বাংলাদেশ বি’জিবি’র রংপুর ক্যাম্পের অধিনায়ক লে: কর্ণেল শরিফুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
সূত্রঃ সবদিকের খবর
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply