ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে বিকাশ প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৮। এ সময় বিকাশে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ মোবাইল, সিমকার্ড, ইয়াবা, গাঁজা ও ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। রোববার ভোরে তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালায় র্যাব-৮-এর একটি দল। রোববার দুপুরে ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৮-এর কোম্পানি অধিনায়ক মেজর শেখ নাজমুল আরেফিন পরাগ। র্যাব জানায়, ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মিয়া পাড়া এলাকার কিছু ব্যক্তি বিকাশ প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে জানতে পারে র্যাব। বিষয়টি নিয়ে র্যাবের কাছে অভিযোগ দেয় অনেকেই। এ বিষয়ে ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্প গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য গভীর অনুসন্ধান চালায়। ঘটনার সত্যতা পেয়ে রোববার ভোরে র্যাবের একটি বিশেষ দল উপজেলার মিয়া পাড়া এলাকায় অভিযান চালায়।
অভিযানের সময় বিকাশের প্রতারণা চক্রের সক্রিয় সদস্য মো. রুবেল ফরাজী (২৩), মো. উজ্জল ফরাজী (১৯), মো. ওবাইদুল শিকদার (৩৩), মো. সুমন হাওলাদার (২০) ও মো. বাবু মাতুব্বরকে (২০) গ্রেফতার করা হয়। এ সময় বিকাশে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৪৬টি মোবাইল, ৫৭৮টি সিমকার্ড, দুটি রাউটার, ১৬৪ পিস ইয়াবা, দুই বোতল ফেনসিডিল, ১৭৫ গ্রাম গাঁজা ও নগদ ৯০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। মেজর শেখ নাজমুল আরেফিন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিকাশে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃত পাঁচজন। বিকাশ প্রতারক চক্রের এসব সদস্য বিভিন্ন দুর্নীতিগ্রস্ত মোবাইল সিম বিক্রেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে। পরে পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া ব্যক্তির নামে সিমকার্ড রেজিস্ট্রেশন করে। ওই সিমকার্ড ব্যবহার করে অসাধু বিকাশ এজেন্টদের মাধ্যমে ভুয়া বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলে তারা।
তিনি আরও বলেন, প্রতারক চক্রের এসব সদস্য বিকাশ এজেন্টদের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে বিকাশের বিভিন্ন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট নম্বর ও লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করে। পরে ভুয়া নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত সিমকার্ড ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিকাশ গ্রাহকদের কাছে ফোন দেয়। গ্রাহকদের ফোন দিয়ে নিজেদেরকে বিকাশ হেড অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দেয়। গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে কৌশলে বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন কোড জেনে নেয় তারা। পরে স্মার্ট ফোনে বিকাশ অ্যাপস ব্যবহার করে সাধারণ গ্রাহকদের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয় চক্রটি। র্যাবের মেজর শেখ নাজমুল আরেফিন আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা আরও স্বীকার করেছে বিকাশ প্রতারণার সঙ্গে সঙ্গে সংঘবদ্ধভাবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার বিভিন্ন এলাকায় মাদকদ্রব্য কেনাবেচা করে। বিকাশ প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে এর আগেও মামলা হয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা যায়। তাদের বিরুদ্ধে ভাঙ্গা থানায় নতুন করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply