ভারতের সংবিধানে দেয়া জম্মু কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিয়ে রাজ্য বিলোপ ও অঞ্চলটিকে দ্বিখণ্ডিত করে কেন্দ্রীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার। উপমহাদেশের ইতিহাসে এটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এর তাৎক্ষণিক ও সুদূরপ্রসারী গুরুত্বও বিশাল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত সরকারের এই পদক্ষেপ কাশ্মিরসহ এই অঞ্চলকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে। এবং দীর্ঘমেয়াদে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি মুসলিমপ্রধান এই এলাকাটির মানচিত্রের বৈশিষ্ট্য বদলে দেবে।
৩৭০ ধারার মাধ্যমে প্রাপ্ত বিশেষ মর্যাদাবলে কাশ্মিরে ভারতের অন্যান্য রাজ্যের বাসিন্দাদের সম্পত্তি কেনাবেচার অধিকার ছিলো না। নাগরিকত্ব দেয়ার অধিকারও ছিলো কাশ্মিরীদের হাতে। এসব শর্তেই ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারতে যোগ দিয়েছিল কাশ্মিরীরা।
এখন নাগরিকত্ব প্রদানের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের হাতে। অন্য রাজ্যের বাসিন্দাদের আর সম্পত্তি কেনায়ও বাধা নেই। ফলে হিন্দু বসতি গড়ে তোলা হবে উপত্যকায়। এমন একটি পরিকল্পনার কথা সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে প্রকাশ করে।
এক কোটির বেশি মুসলিম অধ্যুষিত একটি স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলকে ৭ লাখের মতো সেনা ও পুলিশ দিয়ে কার্যত ঘেরাও করে রেখে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ২৪ ঘণ্টা পার হলেও মুসলিম দেশগুলোর পক্ষ থেকে কোনো জোরালো বক্তব্য দেখা যায়নি।
ইতিহাস ও ভূরাজনৈতিক কারণে পাকিস্তানই একমাত্র ব্যতিক্রম দেশ, যারা বিজেপি সরকারের এই জবরদস্তিমূলক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে শক্ত ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এর বাইরে ইউরোপের দেশ তুরস্ক ভারতের পদক্ষেপে উদ্বেগ জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই পদক্ষেপ চলমান পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলবে। সমস্যা সমাধান হওয়া উচিত জাতিসংঘ প্রস্তাবের আলোকে, সংলাপের মাধ্যমে এবং জম্মু কাশ্মির, পাকিস্তান ও ভারতের জনগণের বৈধ স্বার্থের কথা বিবেচনা করে।
এছাড়া আর কোনো দেশের নিন্দা, প্রতিবাদ বা উদ্বেগ প্রকাশের খবর কোনো সংবাদমাধ্যমে দেখা যায়নি। বিশেষ করে মুসলিমবিশ্বের অঘোষিত মোড়ল সৌদি আরব এবং কাশ্মিরের পাশ্ববর্তী ইরান যেন মুখে তালা দিয়েছে! কোনো ধরনের বক্তব্য নেই কাশ্মিরে ভারতের পদক্ষেপের বিষয়ে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক মুসলিম দেশের রাজনৈতিক ময়দানে নানাভাবে সক্রিয়তা দেখালেও কাশ্মিরের ক্ষেত্রে নীরব রয়েছে। এছাড়া মিশর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কাতার ইত্যাদি দেশ থেকেও কোনো ধরনের বক্তব্য আসেনি এ ইস্যুতে।
মুসলিম দেশগুলোর আন্তর্জাতিক সংস্থা ওআইসি’র-ও কোনো বক্তব্য নেই ভারতের নজিরবিহীন আচরণের বিষয়ে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply