প্রাচীনকালে অনেক লোক মধু খেয়ে দীর্ঘ জীবন লাভ করেছেনে। একজন স্বাস্থ্যবান দীর্ঘজীবীর কাছে তার সুস্থ ও দীর্ঘজীবনের রহস্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছিলেন, আমার দৈহিক শক্তির একমাত্র কারন আমি প্রতিদিন এক চা চামচ পরিমাণ মধু গরম জলে ফুটাইয়া পান করি।
আয়ুর্বেদ মত অনুসারে আট রকমের মধু আছে। এর মধ্যে কোনো মধুটি তৈরি করে বড় বড় মৌমাছি (মাক্ষিক মধু), কোনটি বা ছোট মৌমাছি কোনোটি বা তৈরি করে ভোমরা (ভ্রামর মধু), কোনোটি বা ফুল থেকে আপনিই ঝরে পড়ে (মকরন্দ)
মধুর উপকারিত :
মধু শীতল রুক্ষ লঘুপাক, অগ্নি বল ও মেধাজনক। খিদে বাড়ায়, বল বৃদ্ধি করে, মেধা বৃদ্বি করে, মলরোধক, চক্ষু পরিস্কারক, ভগ্ন সংযোজন বা ভাঙা জোড়া দিতে সাহায্যে করে। কাশি, শ্বাস, হিক্কা, জ্বর, পেটের অসুখ, বমি, তৃষ্ণা, কৃমি, রিষদোষ ও কফ বাত, পিত্ত ত্রিদোষ নাশক ইত্যাদি।
পদ্ম মধূ খুব পুষ্টিকর এবং সব রকম চোখের রোগে উপকারী। নতুন মধু একটু শ্লেষ্মা করলেও য়ারাঁ রোগা তারাঁ খেলে একটু মোটা হবেন।পুরোনো মধু খেলে আাবার যারাঁ মোটা তারাঁ রোগা হবেন (কৃশতাকারক)।এ ছাড়াও কুষ্ঠ, অর্শ, রক্তপিত্ত, প্রমেহ, ক্লান্তি, পিপাসা, বমি, মলবদ্বতা দাহ ও ক্ষয়রোগ উপশম করে।মধুর অনেক অসুখ সারিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আছে।বয়স্কদের সকালের জল, খাবার লাল আটার রুটি ও গরম দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে তা যেমন তৃপ্তিকর তেমনই পুষ্টিকর, কোষ্ঠ, রক্ত পরিষ্কারক, বলকর ও স্বাস্থ্যকর।
সুস্থ থাকতে হলে মধুর প্রয়োগ:-
১।চায়ের সঙ্গে মধু ও আদার রস মিশিয়ে খেলে সর্দি ও শ্লেষ্মা রোগের উপশম হয়।
২।শরীরের বাইরের কোনো অংশের ক্ষততে মধুর প্রলেপ লাগালে অনেক সময় মলমের চেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
৩।জলের সঙ্গে অল্প মধু মিশিয়ে খেলে পাকস্থলীর ক্ষত সারে।
4।হাঁপানির মৃদু আক্রমণ এবং শ্বাসের অল্পতায় অনেক সময় মধু শুঁকলে উপকার পাওয়া যায়।
৫। জল-সহ মধুর কুল্লি করলে গায়কদের গলার স্বর বৃদ্ধি পায় এবং অনেকের মতে এটা টনিকের মতো কাজ করে।
৬।চোখের অসুখেও মধু উপকার দেয়।
৭।শিশু ও বৃদ্ধদের পক্ষে আদর্শ শক্তিশালী আহার্য।
৮।গরম জলের সঙ্গে মধুর কুল্লি করলে গলগণ্ড রোগের উপকার হয়।
৯।মৌরির জলের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে শাকসবজির গ্যাস বা দূষিত বায়ু বেরিয়ে যায়।
১০।মেদ রোগে অর্থাৎ যাঁরা খুব মোটা হয়ে যাচ্ছেন তাঁদের রোগা করবার জন্যে বা মেদ কমিয়ে দেওয়ার জন্যে মধুর সঙ্গে অল্প জল মিশিয়ে খেলে সুফল পাওয়া যায়।
১১।দর্বল শিশুকে দু-এক ফোঁটা মধু দুধের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে দুবার খাওয়ালে তার স্বাস্থ্য ভাল হয় ও শক্তি লাভ করে।
১২।এক কাপ দুধে চা চামচ মধু মিশিয়ে রোজ সকালে খেলে শক্তি বৃদ্ধি পায়।
১৩।আদার রস আর মধু এক চা চামচ এক সঙ্গে মিশিয়ে সকালে ও সন্ধেবেলা খেলে সর্দি সেরে যায় ও খিদে পায়।
১৪।মধুর সঙ্গে গুড়ের রস মিশিয়ে খেলে বমি বন্ধ হয়ে যায়।
১৫।টাটকা মাখনের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে ক্ষয় রোগী উপকার পাবেন।
১৬।দুই চা চামচ পাতিলেবুর রসের সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে ব্লাড প্রেসারে যাঁরা ভুগছেন তাঁদের উচ্চ রক্তচাপ কমবে।
১৭।মধুর সঙ্গে জল মিশিয়ে কুল্লি করলে যাদেঁর টনসিল বেড়ে গেছে তাঁরা উপকার পাবেন।
১৮।জল আর মধু একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে রেখে কিছুক্ষণ পর কুল্লি করলে মুখ স্বচ্ছ হয় অর্থাৎ মুখে একটা তাজা ভাব আসে।মুখের ঘা সারে দাহ পিপাসা ইত্যাদি দূর হয়।
১৯।প্রতিদিন সকালে দুই চা চামচ মধু ঠান্ডা জলে মিশিয়ে চার-পাচঁ মাস ধরে খেলে চুলকুনি, ফুসকুড়ি, ব্রণ প্রভৃতি ত্বকের রোগ একেবারে মূল থেকে সেরে যায়।
২০।সকালবেলা এক কাপ গরম বা ঠান্ডা জলে এক চা চামচ এবং রাত্তিরে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে এক চা চামচ মধু খেলে অজীণর্তা ও কোষ্ঠবদ্ধতা দূর হয়ে যায়।
২১।পাতলা পরিষ্কার কাপড় মধুতে ভিজিয়ে শরীরের পুড়ে যাওয়া অংশে রাখলে একটু স্বস্তি পাওয়া যায়।
এই রকমভাবে মধুর অজস্র উপকারিতা তো আছেই।বৈজ্ঞানিক মত অনুসারে মধু সহজে হজম হয়, অত্যন্ত হালকা, শরীরের দাহের শান্তি করে, উত্তেজক, পোষক (পোষণ করে), বলদায়ক ও হৃদ্য অর্থাৎ হৃৎপিণ্ডের পক্ষে উপকারী।নানা রকম অসুখ সারাবার এবং অসুখের বিরুদ্ধে প্রতিরোধশক্তি গড়ে তোলবার ক্ষমতা মধুর আছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply