বাই-সাইকেলে করে একটি মরদেহ নিয়ে যাচ্ছে কিশোর সরোজ। অনুন্নত রাস্তায় সাইকেলের ভারসাম্য রক্ষা করাই যেখানে ১৭ বছরের ওই কিশোরের জন্য কষ্টকর সেখানে একটি মরদেহ নিয়ে যাওয়া যে কতটা কঠিন সেটা না করলে বোঝা মুশকিল।
তাও আবার যেতে হবে চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের বনে। যেখানে সৎকার করতে হবে এই মরদেহের। তাই শত কষ্ট-যন্ত্রণা আর সমাজের অসহযোগিতা ও অবহেলা উপেক্ষা একাই মরদেহ নিয়ে চলছে সরোজ। কারণ মায়ের মরদেহের সৎকার তো করতেই হবে!
সরোজরা নিম্নজাতের! তাই প্রতিবেশীরা কেউ তাকে তার মায়ের শেষ বিদায়েও সহযোগিতার করেনি! সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ওডিশা রাজ্যের করপোবাহল গ্রামে।
ওড়িশার প্রত্যন্ত গ্রাম করপাবহলের বাসিন্দা সে। বাবার মৃত্যুর পর থেকে মা ও বোনের সঙ্গে মামা বাড়িতেই মানুষ হয়েছে সরোজ। দলিত বলে গ্রামে বিধিনিষেধের অন্ত ছিল না। তা বলে মায়ের মৃত্যুর পরেও যে কেউ এগিয়ে আসবে না সেটা ভাবতে পারেনি সে। এই ঘটনা এক ধাক্কায় অনেকটাই বড় করে দিয়েছে তাকে।
সরোজের মা বছর পঁয়তাল্লিশের জানকি সিংহানিয়ার মৃত্যু হয় দুর্ঘটনায়। জল আনতে গিয়ে পা ফস্কে পড়ে যান তিনি। তাতে চরম আঘাত লাগে মাথায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই শেষ। চরম দুঃসময়েও যাঁরা পাশে দাঁড়ালেন না তাঁদের কাছে দয়া ভিক্ষা না করেই একাই সে দায়িত্ব পালন করল সরোজ।
একটি বাঁশের কাঠামো তৈরি করে তার উপর মায়ের দেহ রেখে সেটি সাইকেলের পিছনে বেঁধে একাই নিয়ে যায় সে। দলিত বলে গ্রামে শশ্মানেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই জঙ্গলে গিয়ে মায়ের দেহ সমাধিস্থ করে সে।
Leave a Reply