বড় বড় হোটেল-রেস্তোরাতে যেকোনো অনুষ্ঠান কিংবা খুশির উপলক্ষ্যে প্রায়ই যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে কী খাচ্ছি, তার মান কতটুকু- তা নিয়ে হয়তো আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে না। বেশি টাকা দিয়ে ক্রয় করলেই তার মান ভাল হবে, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। এটিই প্রমাণ হল এবার।
খাবারে নানা অনিয়মের কারণে বুধবার ধানমণ্ডির সাতমসজিদ রোডের পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে সাত লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে র্যামবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম জানিয়েছেন।
তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়া কেএফসির খাবার তৈরিতে বাসি তেলের ব্যবহারের চিত্রও উঠে এসেছে তাদের এই অভিযানে। আরেক রেস্তোরাঁয় ক্রেতাদের খাবারের উচ্ছিষ্ট সুন্দর করে প্লেটে সাজিয়ে রাখা হয়েছিল নতুন ক্রেতার জন্য।
কেএফসি ছাড়া অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হল-মেজবান রেস্টুরেন্ট, ইউনাইটেড কেটারিং, ডাইনামিক ফুড কোর্ট ও আমেরিকান বার্গার।
এদিকে শান্তিনগরে সুপারশপ মীনা বাজারের আউটলেটে গরুর মাংসের দাম বেশি রাখায় এবং অনুমোদনহীন একটি পানীয়তে বিএসটিআইয়ের লোগো লাগিয়ে বিক্রির জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ধানমণ্ডিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনকারী র্যা বের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার বলেন, খাবার তৈরিতে অপরিশোধিত পানি এবং পুরানো তেল ব্যবহারের কারণে কেএফসিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
ওই এলাকায় মেজবান রেস্টুরেন্টে পোলাও ও জর্দায় কাপড়ের রং মেশানোর প্রমাণ পাওয়া যায়। সেখানে প্রচুর সংখ্যক পঁচা ডিমও পাওয়া গেছে। আর রান্নাঘরের পরিবেশ ছিল অস্বাস্থ্যকর। এই প্রতিষ্ঠানকে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ওই দুটোর পর একই এলাকার ইউনাটেড কেটারিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।“সেখানে কাবাব, হালিমের জন্য যে সব মসলা ব্যবহার করা হয় তা ছিল পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত। পিঁপড়াসহ বিভিন্ন ধরনের পোকা মাকড় পাওয়া যায়। পরিবেশ একবারেই অস্বাস্থ্যকর।”
এই প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় বলে ম্যাজিস্টেট সারোয়ার জানান।তিনি বলেন, ‘ডাইনামিক ফুড কোর্টে’ ঢুকে চমকে গিয়েছেন তিনি।“গ্রাহকদের উচ্ছিষ্ট খাবারগুলো ফেলে না দিয়ে সেগুলো নতুনভাবে আরেকজন গ্রাহককে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করার ঘটনা হাতেনাতে ধরা হয়। তাদের রান্নাঘরের অবস্থাও খুবই করুণ।”
এই প্রতিষ্ঠানকে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।সারোয়ার আলম বলেন, “আমেরিকান বার্গার নামের প্রতিষ্ঠানটির বাইরে বেশ চাকচিক্য থাকলেও ভেতরের অবস্থা খুব করুণ। তাদের বার্গারে ব্যবহৃত মাংস ও কিমা ছিল নষ্ট, সেগুলো রাখা হয়েছিল অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে।
“তাদের ফ্রিজে এমন মায়লার আস্তরণ পড়েছে যেন কখনও সেটা পরিষ্কার করা হয়নি।”র্যা বের এই অভিযানের আগে সকালে শান্তিনগরে মীনা বাজারে যায় পুলিশের ভ্রাম্যমাণ আদালত।সেখানে আদালত পরিচালনকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মশিউর বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে রমজান মাসে গরুর মাংসের দাম কেজিপ্রতি ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
মীনাবাজারে এক ধরনের গরুর মাংসের কেজি ৪৫০ টাকা এবং আরেক ধরনের মাংস ৫৪৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছিল।
“নির্ধারিত দামের অধিক মূল্যে বিক্রয়ের অভিযোগে এক লক্ষ টাকা এবং বিএসটিআই’র অনুমোদনবিহীন সোডা ওয়াটারের বোতলের গায়ে বিএসটিআইয়ের লোগো বসিয়ে বিক্রি করায় আরেক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।”
এমন অভিযানের ঘটোনা এটিই প্রথম নয়। এর আগেও বিভিন্ন অনিয়ম ও অসচেতনতার অভিযোগে দেশের নামী-দামী ফুড ব্র্যান্ড গুলোকে জরিমানা করা হয়েছিলো। এবার সময় এসেছে আমাদের আরো একটু সচেতন হবার।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply