প্রাচীনকাল থেকেই যবের ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রাচীন মুনি ঋষিদের মুখ্য আহার যবই ছিল এই রকমই প্রচলিত ধারণা। আয়ুবের্দে বলা হয়েছে – যবের মণ্ড সহজে হজম হয়, মলরোধ করে, শূল নাশ করে ত্রিদোষ (কফ, বাত, পিত্ত) নাশ করে।
যবের রুটি :
সহজে হজম হয়, শরীরের বল ও শুক্র বৃদ্ধি করে, কফ নাশ করে, বায়ু ও মল বৃদ্ধি করে।
যবের ছাতু :
সহজে হজম হয়, শরীর ঠান্ডা করে, বল ও পুষ্টি বৃদ্ধি করে শুক্র বৃদ্ধি করে, শ্রান্তি, দেহের ঘাম,শরীরের দাহ জ্বালা কফ ও পিত্ত নাশ করে, খিদে বাড়িয়ে দেয়, সারক মল ও প্রস্রাব নিঃসারণ করে, বায়ু নিঃসারণ করে।
যব ঠাণ্ডা আর রুক্ষ। যব স্বাদহীন, মলবন্ধ কারক, রক্তপিত্ত কমিয়ে দেয়। নাড়ির গতি ধীর করে, তৃষ্ণা শান্ত করে। পিত্তবৃদ্ধি, কাশি, মাথাব্যথা, হার্টের অসুখ, দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া, জ্বর রোগে যব ব্যবহার করা হয়।
সুস্থ থাকতে যবের ব্যবহার:-
১। ডায়বেটিস রোগীদের পক্ষে যবের আটা বেশি উপকারী। যবের আটা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায় না।
২। যাঁরা মোটা হয়ে যাচ্ছেন তাঁরা যদি চাল গরেম বদরে যবের আটার রুটি খান মেদবৃদ্ধি কমবে। ওই রুটি খেতে হবে টক দইয়ের সঙ্গে কিংবা মেথির শাক বা নটেশাকের তরকারি দিয়ে সঙ্গে মুগের ডালও খেতে পারেন।
৩। যব খেলে প্রস্রাব বেশি হয়-অতএব যাঁরা মূত্রকৃচ্ছ্রতায় ভুগছেন তাঁদের পক্ষে ভাল।
৪। যবের আটা গুকনো তাওয়ায় সেঁকে ঠাণ্ডা জলে গুলে যদি অল্প ঘি মিশিয়ে খাওয়া যায়(বেশি পাতলা বা ঘন হবে না) তৃষ্ণা, দাহ ও রক্তপিত্ত দূর হয়।
৫। যব আর মুগের ডালের জুস তৈরি করে খেলে আন্ত্রিক উগ্রতা শান্ত হয় এবং পেটের অসুখে(অতিসার) উপকার হয়।
৬। যবের আটা আর চিনি সমান সমান পরিমাণে মিশিয়ে খেলে বার বার গর্ভপাত হওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়।
৭। যব, তিল আর চিনি সমান পরিমাণে নিয়ে গুঁড়ো করে মধু মিশিয়ে খেলেও গর্ভপাতের ভয় থাকে না।
৮। অল্প পরিমাণে যবক্ষার খেলে শূল, গুল্ম, লিভারের অসুখ, প্লীহার অসুখ, আর অজীর্ণ দূর হয়।
৯।খুব অল্প যবক্ষার ঘি মিশিয়ে চাটলে এবং তার পাচঁ মিনিটি পরে ঠাণ্ডা জল খেলে বা ঘোল খেলে মূত্রদাহ প্রস্রাব করতে জ্বালা করা মূত্রকৃচ্ছ্র প্রস্রাব কম হওয়া এবং পাথরিতে কিডনি বা গলব্লাডারে পাথর উপকার হয়।
১০। তাওয়ায় সেঁকে যবের আটা, ষষ্ঠিমধু বেটে নিয়ে জলে ধুয়ে নেওয়া ঘি মিশিয়ে প্রলেপ দিলে রক্তবাত ত্বকের বা চর্মের জ্বালা বা প্রদাহ রোগ সারে।
১১। যব পুড়িয়ে তিল তেলে ফুটিয়ে নিয়ে প্রলেপ দিলে অগ্নিদগ্ধ ব্রণ আগুনে পোড়া ঘা সারে।
যবের ছাতু শরীরে শক্তি জোগাতে প্রায় অদ্বিতীয় বলা যায়। প্রায় শুধু ছাতু খেয়েই শ্রমিকেরা সারাদিন ধরে দুরূহ পরিশ্রম করেন। কাজে কাজেই যবের শুধু পথ্য হিসেবেই নয় ‘আহার’ হিসেবেও সমাদৃত হওয়া উচিত।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply