নিলয় ধর, যশোর প্রতিনিধি : যশোর নার্সিং ইনস্টিটিউটে দুর্নীতির তদন্ত আজ। সব প্রমাণপত্র নতুন করে তৈরির অভিযোগ ! অবশেষে আজ বুধবার যশোর নার্সিং ইনস্টিটিউটের দুর্নীতির তদন্তে আসছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত দল। এই তদন্ত কমিটির দৃষ্টি সরাতে ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ সেলিনা ইয়াসমিন পুষ্প নতুন করে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানে ২০১১ থেকে ২০১৯ সালের যেসব রেজিষ্ট্রার রয়েছে সেগুলি নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। সরিয়ে ফেলা হয়েছে কালের সাক্ষী পুরাতন খাতাপত্রগুলো। যাতে পুনঃভর্তি ও ভর্তি জালিয়াতিসহ অসংখ্য দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে। গত এক সপ্তাহ যাবৎ ইনস্টিটিউটের দুর্নীতির সহযোগী সম্প্রতি প্রেষণে আসা উচ্চমান সহকারী গোলাম কাদের, অফিস সহকারী শরিফুল ইসলাম, এমএলএসএস আবু বক্কর বিগত ২০১১ সাল থেকে এ যাবত নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মাস্টারোল রেজিস্ট্রারসহ সকল রেজিস্ট্রার নতুন করে সৃষ্টি করা হয়েছে বলে সূত্রগুলো দাবি করেছে। তদন্ত কমিটির সামনে আর দুর্নীতির প্রমাণ থাকা রেজিস্ট্রার উপস্থাপন করা হচ্ছে না।
এ তথ্য খোদ নার্সিং ইনস্টিটিউটের একাধিক সূত্রের। নার্সিং ইনস্টিটিউটের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর ঢাকার মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) তন্দ্রা শিকদারের নির্দেশে গত ১৫ মে দু’ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির সভাপতি হচ্ছেন, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর ঢাকার পরিচালক (শিক্ষা) জাহেরা খাতুন ও সদস্য নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর ঢাকার নার্সিং অফিসার ডিপিএম খোরশেদ আলম। যশোর নার্সিং ইনস্টিটিউটের নার্সিং ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ সেলিনা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ভর্তি জালিয়াতি, পুনঃভর্তি জালিয়াতি, অনিয়মসহ নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক প্রেরিত অভিযোগ সমূহ সরেজমিনে তদন্তের জন্যে দু’ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অভিযোগটি তদন্ত করে মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন।
পুষ্প তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তের কথা শুনে ছুটে যান ঢাকায়। একদিনের জন্যে বিমানের প্রথম ফ্লাইটে গিয়ে দ্বিতীয় ফ্লাইটে ফিরে আসেন কর্মস্থলে। ফিরে এসে তিনি ইনচার্জ হিসেবে বিগত ২০১১ সাল থেকে যে রেজিস্ট্রার গুলিতে তার দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে সেগুলোসহ সকল রেজিস্ট্রার নতুন করে তৈরির নির্দেশ দেন তার অধীনস্থ অফিস সহকারীদের। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী ও নির্দেশে ২০১৯ সালে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সাইন্স এন্ড মিডওয়াইফারি প্রথম বর্ষের ৭৯ জন ছাত্রীদের স্টুডেন্ট রেজিস্ট্রেশনের ফরম ও ফি প্রেরণের যে তালিকা বাংলাদেশ নার্সিং মিডওয়াইফারি কাউন্সিল বরাবর পাঠানো হয়েছিল সেই তালিকার মধ্যে থেকে চারজন শিক্ষার্থীকে জালিয়াতি করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভর্তি করেছেন তাদেরকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
তারা হচ্ছেন, ভর্তি রোল নং ৪৩২১৪৩ প্রেরণকৃত সিরিয়াল নং ৩৯ মনিরা খাতুন গ্রেড স্কোর ২৫, পিতা জয়নাল মোল্লা মাতা কমলা খাতুন। ভর্তি রোল নং ৪৩০১০৫ সিরিয়াল নং ৬১ আফসানা মিমি লিমা গ্রেড স্কোর ৩৮,পিতা সানোয়ার হোসেন,মাতা ফিরোজা খাতুন। ভর্তি রোল নং ৪১০২১৮ সিরিয়াল নং ৭০ শারমিন আক্তার গ্রেড স্কোর ৪৩,পিতা মনসুর আলী,মাতা ঝরনা খাতুন ও ভর্তি রোল নং ৪৩২৩০৫ সিরিয়াল নং ৭৬ ফাতেমা খাতুন গ্রেড স্কোর ৪৯,পিতা মনিরুজ্জামান ও মাতা রেহেনা বেগম। সেলিনা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত চলতি বছরের বিগত ১০ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিল বরাবর ডিডি নং-ডিডি এ ৩১২৭৮৬৩/০২ দড়াটানা সড়ক শাখা যশোর থেকে প্রেরণ কৃত ৭৯জন শিক্ষার্থীর স্টুডেন্ট রেজিষ্ট্রেশনের ফরম ও ফি খতিয়ে দেখলে বেরিয়ে আসবে তার দুর্নীতি। এভাবে বিগত ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত যেসব ভর্তি জালিয়াতি করেছেন সেগুলি রেজিস্ট্রার তিনি নতুন করেছেন দুর্নীতির সহযোগীদের মাধ্যমে।
পুরাতন বছরের রেজিস্ট্রার নতুন করলে তদন্ত কমিটির চোখে ধরা পড়বেতো? এমন প্রশ্ন খোদ নার্সিং সংশ্লিষ্টদের। রাতারাতি নার্সিং ইনস্টিটিউটের বিগত ২০১১ সাল থেকে এ যাবৎ মাস্টার রোল কল, পুরাতন হাজিরা রেজিস্ট্রার, ভর্তি হাজিরা রেজিস্ট্রার, রেজিস্ট্রেশন বিতরণ রেজিস্ট্ররসহ সকল রেজিস্ট্রার গায়েব করে নতুন করে সৃষ্টি করা হয়েছে। তাছাড়া,বিগত ২০১৪ সালের পর এই প্রতিষ্ঠান থেকে যেসব শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাদেরকে যে মার্কশিট প্রদান করেছেন তাতে সকলকে ‘এ’ গ্রেড দিয়েছেন। অথচ মূল রেজাল্ট শিটে রয়েছে বি,সি,ডিসহ প্রাপ্ত গ্রেড। নিজ ক্ষমতাবলে মাথাপিছু কখনও ১০ হাজার আবার কখনও আট হাজার টাকা নিয়ে গোলাম কাদেরের সহযোগিতায় ‘এ’ গ্রেড প্রাপ্ত মার্কশিট তৈরি করে দিয়েছেন। সেলিনা ইয়াসমিন ইনস্টিটিউটে থাকা শিক্ষার্থীদের ডেকে জানিয়ে দিয়েছেন তদন্ত কমিটির সামনে তার বিরুদ্ধে মুখ খুললে তিনি হয়
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply