নরেন্দ্র মোদি যখন ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’-এর শুটিংয়ে ছিলেন, তখন পুলওয়ামা হামলায় ভারত হারায় অর্ধ শত আধা সেনা। আর যখন সোমবার অনুষ্ঠানটি প্রচার হলো, তখন সংবিধানের বিশেষ মর্যাদা হারিয়ে ঈদের দিনেও অবরুদ্ধ হয়ে আছে কাশ্মীর।
অনুষ্ঠানটি ধারণ করা হয়েছে উত্তরাখন্ডের জিম করবেট ন্যাশনাল পার্কে। শুরুতে দেখা যায়, ব্রিটেনের সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য ও ডিসকভারি চ্যানেলের জনপ্রিয় শো’টির হোস্ট বিয়ার গ্রিলস ও মোদি হেলিকপ্টার থেকে নেমেছেন।
অনুষ্ঠানে কিছুক্ষণ পরপরই মোদিকে বাঘের ভয় দেখাচ্ছিলেন গ্রিলস। একটা রোমাঞ্চকর পরিবেশ তৈরিও হয়। তবে দর্শকের বুঝতে বাকি নেই পুরো সময় তাদের সঙ্গ দিয়েছেন বিশেষ বাহিনীর সদস্যরা।
বিয়ার গ্রিলস বলছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বাঘের হাত থেকে বাঁচানো নিয়ে তার যত চিন্তা। অন্যদিকে মোদি শোনালেন নিজের সাহসের গল্প। শুনিয়ে দেন, ছোটবেলায় বাড়ির কাছের হ্রদ থেকে কুমিরছানা ধরে আনার গল্প।
মোদি বলেন, ‘‘জীবনের সবকিছুর মধ্যেই ভালো কিছু আছে বলে মনে করি। তাই যা-ই ঘটুক, নার্ভাসনেস কখনো প্রকাশ পায় না।’’ গ্রিলস যখন হাতে বল্লম ধরিয়ে বলেন, বাঘ এলে কাজ লাগবে। মোদি বলেন, ‘‘যে সংস্কৃতিতে বড় হয়েছি, কাউকে মারতে পারব না।’’ এ কথা শুনে বিয়ার যখন বল্লমটি ফেরত নিতে চেয়েছেন, মোদি বলেছেন, ‘‘আমি আপনার হয়ে এটা নিজের হাতেই রাখছি।’’
‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’-এর বিশেষ এই পর্ব প্রচার শেষ না হতেই মোদির সেনাপতি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইটে লেখেন, ‘‘সমৃদ্ধ বন্য প্রাণের সঙ্গে সহাবস্থান, তাদের সুরক্ষা এবং প্রকৃতির সংরক্ষণে ভারতীয় ঐতিহ্যের কথা বিশ্বের সামনে তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী। গর্বের মুহূর্ত।’’
তবে বিরূপ মন্তব্য আসেনি- এমন নয়। বন্য প্রাণ সংরক্ষণে পদ্মশ্রী, প্রজেক্ট টাইগারের সাবেক কর্মকর্তা প্রশান্তকুমার সেন আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর এই অনুষ্ঠান নিছকই পর্যটনের প্রচার। এর সঙ্গে বন, বন্য প্রাণ সংরক্ষণের সম্পর্ক আছে বলে মনে হয় না।’’
বাঘ বিশেষজ্ঞ বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘এর সঙ্গে না বন্য প্রাণ সংরক্ষণ, না অ্যাডভেঞ্চার টুরিজম, কোনো কিছুরই স্পষ্ট সংযোগ আছে বলে মনে হলো না। লোকলস্কর নিয়ে হেলিকপ্টারে উড়ে গিয়ে বাঘের দেশে বনের নির্বিঘ্নতা ক্ষুণ্ণ হলো খানিক।’’
ভারতের পাশাপাশি অনুষ্ঠানটি প্রচার হয়েছে বিশ্বের ১৮০টি দেশে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply