প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ বলেছেন, এই সংসদে প্রবেশ করেছি, আমরা আশা করব, বাংলাদেশে সুশাসন ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের মাননীয় সংসদ নেতা উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। জাতীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সংলাপ আহ্বান জানিয়ে একটি আবহ তৈরি করবেন, রাজনীতিতে সুবাতাস ফিরিয়ে আনবেন।
রোববার (১৬ জুন) সংসদে সম্পূরক বাজেটের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
হারুন বলেন, আজকে আমাদেরকে বলা হচ্ছে যেই সংসদকে অবৈধ বলছেন, সেই সংসদে কেন আসছেন। সংসদের বাইরে থাকলেই তো পারতেন। সংসদে ৬ জন প্রবেশ করার মধ্য দিয়ে কিন্তু এই সংসদ বৈধতা পাবে না, পাবে না, পাবে না। কারণ আমরা এই সংসদে প্রবেশ করেছি, এর অন্যতম কারণ হচ্ছে সংবিধানে আমাদের যে গণতান্তিক স্পেস রয়েছে, সেই স্পেস এই সংসদে অনুপস্থিত। তাই আজ আওয়ামী লীগ বলেন, মহাজোটই বলেন- আপনারা ঢাক-ঢোল বাজিয়ে সভা সমাবেশ করেন আর আমরা সভা-সমাবেশ করতে গেলেই নাশকতার প্রশ্ন তুলবেন, অনুমতি না দেয়ার প্রশ্ন তুলবেন। এটি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যেসব অর্জন করেছি, সেটা ধ্বংস হয়ে গেছে। এটি কী করে আমরা ফিরিয়ে আনবো, পুনরুদ্ধার করবো, সেটিই হচ্ছে আজকে আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, আমি মাননীয় সংসদ নেতাকে অনুরোধ করবো, আপনি আপনার পরিবারের প্রায় সবাইকে হারিয়েছেন। এ নিয়ে ব্যথা-বেদনা সবচেয়ে আপনারই বেশি। পবিত্র কোরআনে স্পষ্টভাবে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, হাদিসেও বিষয়টি আছে, যখন চারদিকে ইসলামের বিজয় পতাকা উড়ছে, তখন এক সাহাবী এসে নবীকে (সা.) বললেন আমাকে একটি জায়গার গভর্নর বানিয়ে দিন। আল্লাহর রাসুল (সা.) বুঝলেন ওই সাহবীর অন্তরে ক্ষমতার লোভ প্রবেশ করেছে। আর তাই জীবদ্দশায় ওই সাহাবীকে কোথাও কোনো দায়িত্ব দেয়া হয়নি। আজ এই সংসদে আমি লক্ষ করছি- আপনাকে সামনে রেখে আপনার তোষামোদি করছে। তাদের বিষয়ে আপনি বেশি সতর্ক থাকবেন। আপনার জন্য মঙ্গল হবে। সূরা বনি ইসরাইলে আল্লাহ বলেছেন, আমার বান্দাদেরকে বলে দিন তারা যেন উত্তম কথা বলেন, শয়তান তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধায়, নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু।
তিনি আরো বলেন, সংবিধানের ২৬৭ বিধিতে সংসদ সদস্যদের পালনীয় বিধি দেয়া আছে। গত দিন বিএনপির একমাত্র সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা কিছু কথা বলেছেন। তিনি কথা বলার সময় অন্য সংসদ সদস্যরা তাকে কথা বলতে দেননি। ক্ষতাসীন দলে ৪৪ জন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য আছেন। আপনারা সবাই মিলে যদি হইচই করেন। আমরা এখানে কথা বলতে পারব না। এর মাধ্যমে মেসেজটা কী যাচ্ছে? এতে মেসেজ যাচ্ছে- আপনারা আমাদের সংসদে কথা বলতে দিতে চান না। আমরা অবশ্যই ভালো কথা বলব, যুক্তি-তথ্য দিয়ে কথা বলব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট ৪৯ বছরের ইতিহাসে একটা নজির যদি দেখাতে পারেন, বাংলাদেশে যারা যাবজ্জীবন দণ্ডিত ব্যক্তি অথবা জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের আসামি, ফাঁসির আসামি- তারাও উচ্চ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করলে ওই জামিনের শুনানি হবে ৩ মাস পরে। এখন বাংলাদেশে উচ্চ আদালত বা নিম্ন আদালত কোনোটাই স্বাধীন নয়। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ গায়েবি মামলার আসামি। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে, গায়েবি মামলা নেই। আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলবো, আমি আজকে ২০টি মামলার আসামি। আমার এলাকার হাজার হাজার নেতাকর্মী মামলার আসামি। রাত ২টায় বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আসা হয়। আর বলা হয় তারা নাকি নাশকতার কাজে যুক্ত ছিলেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে আজ গোটা জাতি জর্জরিত।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply