জাহেদ হাছান তালুকদার রাংগুনীয়া প্রতিনিধি :কিয়াম শব্দের অর্থ “দাঁড়ানো।দুনিয়াদার আলেমরা এই মহাফজিলতপূর্ণ আমলটিকে “বেদাত” বলে ঘোষণা করে থাকে ।
দুনিয়াদার আলেমরা এই মহাফজিলতপূর্ণ আমলটিকে “বেদাত” বলে ঘোষণা করে থাকে।। এই
লেখাটি পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন ওরা কত বড় মিথ্যুক ও রাসুলবিদ্বেষী।
১। “আবু দাউদ “কিতাবে হজরত ইবনে ওমর (রাঃ )হইতে বর্ণিত আছে,, হুজুর পাক যখন হুজরা শরীফ থেকে বাহির হতেন, তখন আমরা সকলেই তাহার সম্মানার্থে দাঁড়াইতাম।।
২। হজরত ইমাম বোখারী তাঁর লিখিত ইতিহাসে হজরত উম্মে সালমা (রাঃ) হতে রেওয়ায়েত করেছেন,, “হুজুর পাক যখন দাঁড়াইতেন, তখন আমরা সকলেই দাঁড়াইতাম।।
৩। হজরত ইমাম মালিক “মওতা”নামক কিতাবে লিখেছেনঃ “মক্কা বিজয়ের দিন রাসুলে পাক (দ:) নিজেই আকরামা বিন আবি জেহালের জন্য কিয়াম করেছিলেন, কেননা তিনি মক্কার একজন বিশিষ্ট নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ছিলেন।।
৪। তিরমিযী শরীফে হজরত আয়শা সিদ্দিকা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে,, রাসুলে পাক (দ:) জায়েদ বিন হারিসের জন্য কিয়াম করেছিলেন।
৫। আল্লামা আইনী “উমদাতুল কারী কিতাবুল জিহাদ” এর মধ্যে লিখেছেনঃ “হজরত আদ্দি হাতিম বলেছেন,, “আমি যখনই হুজুর পাকের দরবারে যাইতাম, তখনই তিনি আমার জন্য কিয়াম করিতেন”।
৬। বুখারী ও মুসলিম শরীফে হজরত আবু সাঈদ হতে বর্ণিত আছে,, হুজুর পাক (দ:) সাআদকে দেখে বললেন, “কুম ইয়া সাইয়িদাকুম “।অর্থাৎ, তোমরা নিজেদের কওমের সরদারের জন্য কিয়াম কর।।
৭। তিরমিজি ও ইবনে হাব্বানের মধ্যে হজরত আয়শা সিদ্দিকা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে,, হজরত ফাতিমা (রা) যখনই হুজুর পাকের নিকট আসতেন, হুজুর পাক তখনই তাঁর সম্মানার্থে কিয়াম করতেন।।
৮। “ইবনে আকছার” নামক কিতাবে হজরত আনাস (রা) হতে বর্ণিত আছে,, রাসুলুল্লাহ (দ:) বলেন,, ” আমার দুই ব্যাটা ইমাম
হাসান ও ইমাম হোসাইন এবং তাঁর আওলাদের জন্য কিয়াম করেন।।
(( শহীদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ফারুকী (রহঃ) রচিত “সাকীয়ে কাওসার” কিতাব থেকে সংগৃহীত))।
কিয়াম অর্থাৎ দন্ডায়মান হওয়া সাত প্রকার। যথা-
০১. ফরজ ০২. ওয়াজিব ০৩. সুন্নাত ০৪. মুস্তাহাব ০৫. জায়েজ ০৬. মাকরুহ ০৭. হারাম।
০১.পার্থিব প্রয়োজনে দাঁড়ানো জায়েয এর হাজার হাযার উদাহরণ রয়েছে যেমন- দাঁড়িয়ে কাজ করা পবিত্র কোরআনে আছে যখন জুমা’আর নামাজ শেষ হবে তখন তোমারা জমিনে ছড়িয়ে পড়।
০২.পাঁচ ওয়াক্তিয়া নামাজে দাঁড়ানো ফরজ।
০৩. বিতির ও ঈদের নামাজের জন্য দাঁড়ানো ওয়াজিব।
০৪. নফল নামাযে দন্ডামান হওয়া মুস্তাহাব! অবশ্য বসেও জায়েয ! তবে দাঁড়িয়ে পড়লে ছওয়াব বেশী।
০৫. কয়েকটি বিশেষ সময় দাঁড়ানো সুন্নাত! যেমন- যমযমের পানি ও ওযুর অবশিষ্ট পানি দাঁড়িয়ে পান করা সুন্নাত!
ফাত্ওয়ে আলমগীরীর প্রথম খন্ডে কিতাবুল হজ্বের শেষে ‘জিয়ারাতু কাবরিন নবীয়্যি’ অধ্যায়ে উল্লিখিত আছে পবিত্র রওযা শরীফের সামনে এমনভাবে দাঁড়াবেন যেভাবে নামাযে দাঁড়ানো হয়।
এবং সেই প্রবিত্র চিত্র মনের মধ্যে এমন ভাবে স্থাপন করুন, যাতে মনে হয় হুযুর (দ.) রাওজা পাকে আরাম ফরমাচ্ছেন,তাকে চিনতেছেন ও তার কথা শুনতে ছেন।
অনরূপ মুমিনদের কবরে ফাতেহা পাঠ করার সময় কেবলার দিকে পিঠ এবং কবরের দিকে মুখ করে দাঁড়ানো সুন্নাত। (আলমগীরী)
মিশকাত শরীফের আল কিয়াম অধ্যায়ে, হযরত আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত আছে- যখন হুযূর আলাইহিস সালাম বৈঠক থেকে উঠতেন তখন আমরা দাঁড়িয়ে যেতাম এবং এতটুকু পর্যন্ত দেখলাম যে তিনি তাঁর কোন পবিত্র বিবির ঘরে প্রবেশ করছেন।
ফাত্ওয়ায়ে আলমগীরি কিতাবুল কারাহিয়াতে বর্ণিত আছে খোদা ভিন্ন অন্য কাউকে দাঁড়িয়ে করমর্দন করে বা নত হয়ে সন্মান করা জাইয।
মুসলিম শরীফ দ্বিতীয় খন্ডে বর্ণিত আছে- তালহা ইবনে উবাইদুল্লাহ দাঁড়িয়ে গেলেন এবং দৌড়ে এসে আমার সাথেমুসাফা করলেন ! য়মিশকাত শরীফ কিতাবুল ঈমান তৃতীয় পরিচ্ছেদে হযরত উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে আমাকে হযরত সিদ্দিকে আকবার (রাঃ) যখন একটি শুভ সংবাদ শোনালেন অখন আমি দাঁড়িয়ে গেলাম।
০৬. কয়েক জায়গায় দাঁড়ানো মাকরুহ ! যমযমের ও ওযুর পানি ব্যতীত পানি পান করার সমায় দাঁড়ানো মাকরুহ !
০৭. কোন হারাম কাজ করার উদ্দেশ্যে দাঁড়ানো হারাম !
প্রিয় নবী (দ.)’র উম্মত তথা মুসলমানদের জন্য যিকরে বিলাদাতের চেয়ে বড় খুশীর বিষয় আর কি হতে পারে আর খুশীর সংবাদে দাঁড়ানো সুন্নাত।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply