বরগুনায় প্রকাশ্য দিবালোকে যুবক রিফাতকে তার স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তরফে এখন পর্যন্ত কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার মধ্যে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতপ্রণোদিত হয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) এই আদেশ দেন।
আদালতে দায়িত্ব পালনকারী রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাসারকে বরগুনার ডিসি ও এসপির কাছ থেকে এ বিষয়ে জেনে হাইকোর্টকে জানাতে বলা হয়েছে।
গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার কলেজ রোড এলাকার হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এ হত্যাকাণ্ডের প্রকাশিত প্রতিবেদন আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে হাইকোর্টের নজরে আনেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। পরে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বতপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।
রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটিকে খুবই দুঃখজনক মন্তব্য করে হাইকোর্ট বলেন, সারা দেশের সবাই এই ঘটনায় মর্মাহত। সমাজটা কোথায় যাচ্ছে?
আদালত আরও বলেন, ‘প্রকাশ্য রাস্তায় মানুষটাকে মারল। একজন ছাড়া কেউ এগিয়ে আসল না। জনগণকে আপনি কী করবেন? বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমন ছিল না। ভিডিও করল, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসল না। এটি জনগণের ব্যর্থতা। তাই এই সামাজিক সচেতনতা তৈরি করবে কে? দাঁড়িয়ে দেখেছে, কেউ প্রতিবাদ করল না। পাঁচজন মানুষ অন্তত এগিয়ে আসলে হয়তো তারা সাহস পেত না। হয়তো তারা (দুর্বৃত্তরা) ক্ষমতাবান, হয়তো মানুষ ভয়ে এগিয়ে আসেনি।’
এ সময় আদালত জানতে চান, মামলা হয়েছে কি না। উপস্থিত এক আইনজীবী বলেন, নিহত রিফাতের বাবা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর আদালত ডেপুটি অ্যাটর্নি এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশারকে ওই তথ্য বেলা দুইটায় মধ্যে আদালতকে অবহিত করতে নির্দেশ দেন।
গতকালের ঘটনায় নিহত রিফাত শরীফ (২৩) সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামের দুলাল শরীফের ছেলে। মা-বাবার একমাত্র সন্তান ছিলেন রিফাত। হামলার পর গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে তাকে বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ভিডিওতে যে দুই যুবককে দেখা যায় তাদের একজনের নাম নয়ন বন্ড এবং আরেকজন রিফাত ফরাজী। তারা ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত। এসব ঘটনায় তারা একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন।
এ ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতে রিফাতের বাবা ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ভোরে চন্দন নামের এক যুবককে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply