স্থানীয় পুলিশ বলছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গাদের নিজেদের মধ্যে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশে ১১ লাখের মতো রোহিঙ্গার বাস। সেখানে অস্থিরতা তৈরি হওয়ার আশংকা করা হচ্ছিলো অনেক দিন ধরেই।
নিহত ‘মাঝির’ সংঘর্ষের জেরেই আবারও ক্যাম্পে এই উত্তেজনা। জেলার পুলিশ সুপার একেএম ইকবাল হোসেইন জানিয়েছেন, নিহত আরিফউল্লাহকে তাদের ভাষায় মাঝি বলা হতো, অর্থাৎ সে নেতা গোছের।
”আরিফউল্লাহ বালুখালি ক্যাম্প থেকে পালংখালি যাচ্ছিলো। পথে কয়েকজন তাকে ঘিরে ধরে এলোপাথাড়ি ছুরি দিয়ে কুপিয়ে চলে গেছে,” তিনি বলেন।
“নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এটা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করছি,” মিঃ হোসেইন বলেন।
ত্রাণ বিতরণ, তথ্য সংগ্রহ ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়তা করাসহ ক্যাম্পের নানা ইস্যুতে সরকার ও অন্যান্য সাহায্য সংস্থার সাথে কাজ করতেন নিহত আরিফউল্লাহ। এর আগেও জানুয়ারি মাসের দিকে তার উপরে আরেকটি হামলার ঘটনা ঘটেছিলো।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে এরই মধ্যে সেখানে আরেকটি ক্যাম্পে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় দশজন আহত হয়েছে।
টেকনাফের নয়াপাড়া ক্যাম্পে দোকানের নিয়ন্ত্রণ নেয়াকে কেন্দ্র করে দুজনের মধ্যে ছুরি মারার ঘটনার পর বিষয়টি আরো বড় ধরনের সংঘর্ষে রূপ নেয়।
নয়াপাড়া ক্যাম্পের বাসিন্দা ইসমত আরা বলছেন, “দোকান নিয়ে অনেক বেশি হইছে মারামারি। আমরা তাই সাবধানে আছি। যদি এরকম কিছু আবার ঘটে তাই।” গত আগস্ট থেকে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে সাত লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আগে আসা রোহিঙ্গাদেরসহ এখন প্রায় ১১ লাখের মতো রোহিঙ্গা কক্সবাজারের নানা উপজেলায় প্রায় ৩০টি ক্যাম্পে বসবাস করছেন।
খুব ঘনবসতিপূর্ণ, ছোট ছোট খুপরি ঘরে কোন ধরনের নাগরিক সুযোগসুবিধা বিবর্জিত মানবেতর পরিস্থিতি সেই ক্যাম্পগুলোর, যেখানে এখন বৃষ্টির কারণে ভূমিধ্বসের সম্ভাবনা ও অসুখবিসুখের ঝুঁকিতে পরিস্থিতি আরো সংকটপূর্ণ।
এসব ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের নিজেদের মধ্যে অথবা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে বেশ কিছুদিন ধরেই আশংকা ছিল।
স্থানীয় সাংবাদিক তোফায়েল আহমেদ বলছেন, দিন দিন সেখান থেকে এক ধরনের অস্থিরতার খবরাখবর আসছে।
“স্বদেশে ফিরে যাওয়া, ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, জায়গা বরাদ্দ, ক্যাম্পে বসবাস, এসব কিছু নিয়ে একে অপরের প্রতি একটা সন্দেহ তৈরি হয়েছে,” তোফায়েল আহমেদ বলেন।
পুলিশ সুপার একেএম ইকবাল হোসেইন সংঘর্ষকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই দেখছেন।
“পৃথিবীর কোথাও এক জায়গায় এতগুলো লোক একসাথে এভাবে বসবাস করে না। সেই হিসেবে এদের মধ্যে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটতেই পারে.” তিনি বলেন।
রোহিঙ্গাদের মধ্যে নেই কোনো শিক্ষা, কিংবা সামাজিক জ্ঞান। এরা কুসংস্কার আচ্ছন্ন এক বিশাল জনগোষ্ঠী।
এটিও প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভূমিকা রাখছে তাদের হিংস্র হয়ে উঠতে।
রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য যে কত বর হুমকিসরূপ এটিই প্রমাণ হচ্ছে বারবার। এদের মিয়ানমারের যথা শীঘ্র ফেরত পাঠাবার ব্যবস্থা না করা গেলে আমাদের দেশের আনাচে কানাচে এরা ছড়িয়ে পড়বে। ছড়াবে বিভিন্ন মাদক ও অপরাধ মূলক কাজও।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ ও এস
Leave a Reply