রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে যারা নোংরা খেলা খেলছে, তাদের ব্যাপারে সরকারের কাছে তথ্য আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সময়মতো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি রোহিঙ্গা ইস্যুকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে দেখছে বলেও জানান তিনি।
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ কীভাবে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন পার হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গিয়ে আবার একই ইমিগ্রেশন পার হয়ে দুদিন আগের সমাবেশে যোগ দিয়েছেন, এ বিষয়টিকে সরকার কীভাবে দেখছে—সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সব বিষয়ই আমাদের নলেজে আছে। রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য আমরা দিয়ে যাচ্ছি, আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছি। তাদের নিয়ে যারা খেলতে চায়, তাদের নিয়ে নোংরা খেলা যারা করতে চায়, তাদের ব্যাপারেও আমাদের কাছে তথ্য আছে। সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রোহিঙ্গারা কীভাবে মোবাইল পেল, এমনকি তারা একই রঙের টি-শার্ট কোথা থেকে সংগ্রহ করেছে—জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আছে, এখানে সমস্যা আছে, এখানে বিদেশ থেকেও মদদ আছে, বাংলাদেশেও একটা মতলবি মহল আছে। যারা আন্দোলন-সংগ্রাম-নির্বাচনে ব্যর্থ, তাদের এখন ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কোনো পথ নেই। তারা একবার কোটা আন্দোলন, একবার নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, এইসব আন্দোলনকে পুঁজি করে তারা অতীতে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করেছে। এখন তারা রোহিঙ্গা ইস্যুকে রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে বেছে নিয়ে এটাকে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্রমূলক ফায়দা লোটা যায় কি না, সেটা তো নিশ্চয় তাদের মাথায় আছে, তাদের সহযোগিতা থাকতে পারে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মিয়ানমারও বন্ধুহীন দেশ, এ কথা ভাবার সুযোগ নেই। তাদেরও বন্ধু আছে, তাদেরও মিত্র আছে। কাজেই তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে যেমন অনাগ্রহ আছে, তেমনি আন্তর্জাতিকভাবে তাদের ওপর চাপও কিন্তু ক্রমাগত বাড়ছে। সাফল্য এখানে যে পৃথিবীতে কোনো দেশ রোহিঙ্গাদের এত উদার, সীমান্ত খুলে দিয়ে আশ্রয় দেয়নি। যেটা শেখ হাসিনার বাংলাদেশ বিশ্বকে দেখিয়েছে। মানবতা উদারতার দুয়ার খুলে দিয়েছে। বিএনপি ছাড়া বিশ্বের কোনো দেশই এখানে শেখ হাসিনা সরকারের ব্যর্থতা আছে বা কোনো দোষ আছে, কোনো দুর্বলতা আছে, এমনটা কেউ বলেনি। সারা বিশ্ব প্রশংসা করছে। প্রশংসা তারাই করতে কুণ্ঠিত, যারা রোহিঙ্গাদের সমস্যা থেকে ফায়দা তুলতে এ যাবৎ ব্যর্থ।’
রোহিঙ্গারা কোনো দিন বাংলাদেশ ছেড়ে যাবে না, বাংলাদেশ কি প্যালেস্টাইন হতে যাচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই বিষয়টা একেবারেই অযৌক্তিক বিষয়। এটার কোনো বাস্তবসম্মত ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ নেই। ফিলিস্তানিরা তাদের নিজ ভূমিতে আছে। রোহিঙ্গারা নিজ ভূমে পরবাসী, বাংলাদেশ তো তাদের ভূমি না। কাজেই এটার সঙ্গে তুলনা হয় না।’
বাংলাদেশে এখন ‘ঘোর অমানিশা’ চলছে—বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আসলে বাংলাদেশে অমানিশা চলছে, এটা দেশে-বিদেশে এ নিয়ে কারো কোনো মন্তব্য নেই। বাংলাদেশে যদি অমানিশা চলে, তাহলে বিএনপিতে অমানিশা চলছে। তারা আজকে পথ হারিয়ে দিশেহারা পথিকের মতো ছুটে বেড়াচ্ছে। যখন যেখানে যা খুশি তাই বলছে, প্রধানমন্ত্রীকে পর্যন্ত অশ্রাব্য ভষায় কথা বলছে। তাদের প্রতিনিধিরা এমন বিদ্বেষপ্রসূত কথাবার্তা বলে. যা রাজনীতি বা গণতন্ত্রের ভাষা নয়। কিন্তু কাউকে তো কোনো হুমকি দেওয়া হচ্ছে না, কাউকে তো এমন কথা বলার জন্য সভা-সমাবেশ করার জন্য কোনো প্রকার হুমকির পরিবেশ সৃষ্টি করছে না সরকার।’
এ সময় ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, আপনার নেতারা নিরাপদে আছেন। আপনারা নিজেরা নিজেদের গুটিয়ে ফেলেছেন। এখন এই দেশে বিরোধী দলের ব্যপারে যে নিরাপত্তা, এই নিরাপত্তা আমার তো মনে হয় সাউথ এশিয়ার অন্য কোনো দেশে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে বলে মনে হয় না। সেদিক থেকে কেন আপনি নিজেকে নিরাপদ মনে করছেন না?’
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply