সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র শিশু ইমন হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার রায়ে প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা, ২০১ ধারায় ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রেজাউল করিম বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সাড়ে ১২টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- বাতির কান্দি গ্রামের সালেহ আহমদ, একই গ্রামের রফিক, জায়েদ ও উপজেলা ব্রাহ্মণ জুলিয়া গ্রামের সুজন। এদের মধ্যে সালেহ আহমদ পলাতক রয়েছেন।
আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট কিশোর কুমার কর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, লোমহর্ষক এ ঘটনায় অভিযুক্তরা উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে। তিনি আদালতকে ধন্যবাদ জানান এবং দ্রুত রায় কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আহবান জানান। মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী সুশীল চন্দ্র দাস মামলার রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
জানা যায়, ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের বাতিরকান্দি গ্রামের সৌদি প্রবাসী জহুর আলীর ছেলে ও লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কারখানার কমিউনিটি বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণীর ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান ইমনকে ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ অপহরণ করা হয়। পরে মুক্তিপণের টাকা পাওয়ার পরও অপহরণকারীরা শিশু ইমনকে হত্যা করে। ৮ এপ্রিল মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সিলেটের কদমতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে শিশু ইমনের হত্যাকারী ঘাতক ইমাম সুয়েবুর রহমান সুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, বিষের বোতল ও রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করে। বাতিরকান্দি হাওর থেকে ইমনের মাথার খুলি ও হাতের হাড় উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় জড়িত কয়েকজনকে।
প্রসঙ্গত, মামলাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মামলাটি ট্রাইব্যুনালে উঠে। মধ্যখানে বিরতির পর গত ২ আগস্ট থেকে আবার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক শেষে মামালার রায় প্রদান করা হয়। আলোচিত এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন, বর্তমানে হবিগঞ্জের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ শহীদুল আমিন ও সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যাম কান্ত সিনহা, ডাক্তার, তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নিহতের মা বাবাসহ ২৩ জন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply