আলোচিত অভিনেতা হিরো আলম বলেছেন, ‘সচিবরা হচ্ছেন রাষ্ট্রের চাকর। জনগণের টাকায় তাদের বেতন হয়। বিষয়টি তাদের মনে রাখা দরকার। জনগণের সঙ্গে আদব নিয়ে কথা বলা দরকার।’ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদকে নিয়ে কথাগুলো বলেন তিনি।
হিরো আলমকে নিয়ে ইসি সচিবের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, একজন সচিব এমপি প্রার্থীর সঙ্গে তুই-তোমারি করে কথা বলতে পারেন না। তিনি আমারে ইনসাল্ট (অপমান) করে কথা বলেছেন। আমি সচিবের কথার নিন্দা জানাই এবং তার পদত্যাগ দাবি করছি।
হাইকোর্টের আদেশ নিয়ে ব্যালট পেপার ছাপানো নিয়ে বিড়ম্বনার কথা বলতে গিয়ে ইসি সচিব বুধবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘হিরো আলম পর্যন্ত ইসিকে হাইকোর্ট দেখায়। সেও বলে যে, নির্বাচন কমিশনকে হাইকোর্ট দেখিয়ে ছাড়ছি; বোঝেন অবস্থা!’
এর প্রতিক্রীয়ায় হিরো আলম বলেন, ইসি সচিব আমাকে ইনসাল্ট (অপমান) করে কথা বলে নাগরিকদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ প্রকাশ করেছেন। একটি দায়িত্বপূর্ণ জায়গায় থেকে একজন প্রার্থী সম্পর্কে তিনি এ কথা বলতে পারেন না। এ ধরণের মন্তব্যের জন্য আমি অবশ্যই তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নির্বাচন কমিশনে নালিশ করব।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের স্বতন্ত্র এই প্রার্থী নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের পদত্যাগও দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, বগুড়া-৪ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন আলোচিত অভিনেতা হিরো আলম। মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়ন বাতিল করেন। ইসিতে আপিল করেও প্রার্থিতা ফিরে পাননি হিরো আলম।
পরে হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট তার মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ দেন। পরে হিরো আলম বলেন, ইসিকে হাইকোর্ট দেখিয়ে ছাড়লাম।
বুধবার একটি প্রশিক্ষণে দেয়া বক্তৃতায় হিরো আলমের প্রসঙ্গ তুলেন ইসি সচিব। হিরো আলমের ‘হাইকোর্ট দেখানো’ প্রসঙ্গে ইসি সচিব আরও বলেন, ও তো (হিরো আলম) স্বতন্ত্র প্রার্থী। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে যখন গেল তার মনোনয়ন বাতিল হল। আপিলে বাতিল হল। পরে হাইকোর্টে রিট করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছে হিরো আলম। তাকেও প্রতীক দেয়া হয়েছে। এ রকম ৫০ জনের বেশি স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। তাদের প্রতীক নিয়েও হাইকোর্ট নানা নির্দেশনা দিচ্ছেন। এসব নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন ও ব্যতিব্যস্ত।
ইসি সচিবের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হিরো আলম বলেন, একজন সচিব এমপি প্রার্থীর সঙ্গে তুই-তোমারি করে কথা বলতে পারেন না। তিনি আমারে ইনসাল্ট (অপমান) করে কথা বলেছেন। আমি সচিবের কথার নিন্দা জানাই এবং তার পদত্যাগ দাবি করছি।
অভিমানী হিরো আলম আরো বলেন, রাষ্ট্রের সব মানুষ নির্বাচন করার অধিকার রাখে। আমি দুর্বল বলে কি নির্বাচন করতে পারব না? সচিবরা হচ্ছেন রাষ্ট্রের চাকর। জনগণের টাকায় তাদের বেতন হয়। বিষয়টি তাদের মনে রাখা দরকার। জনগণের সঙ্গে আদব নিয়ে কথা বলা দরকার।
বগুড়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের মনোনয়ন বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং অফিসার। এর পর ইসিতে আপিল করেন হিরো আলম। এর পর ৬ ডিসেম্বর প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে হিরো আলমের আপিল নামঞ্জুর করে নির্বাচন কমিশন। ইসিতে ব্যর্থ হয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করেন হিরো আলম।
গত সোমবার নির্বাচন কমিশনের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার হিরো আলমের মনোনয়ন গ্রহণের নির্দেশ দেন।
আদেশের পর হিরো আলম বলেন, ইসিকে হাইকোর্ট দেখিয়ে দিলাম। আমি এখন খুব খুশি। হাইকোর্টে যে ন্যায়বিচার পাওয়া যায়, তা প্রমাণ হল। ইসি যে বলছিল-আমার ভোটার তালিকা ভুয়া, তা আজ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইউটিউবে বিচিত্র অভিনয়, গান আর নাচ দেখিয়ে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন হিরো আলম। তার প্রকৃত নাম আশরাফুল আলম। তিনি এর আগেও স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচিত এই ‘হিরো’।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply