বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট একটি সতর্কবার্তা নির্দেশনা জারি করে। এই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, যে কোন ব্যাংকে যে কোন সময় সাইবার হামলা হতে পারে।
এমন আশঙ্কায় দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে সতর্ক থাকতে নির্দেশ জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশনায় দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা বাড়াতে বলা হয়েছে।
দেশের সব বাণিজিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো এই সতর্কবার্তায় বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং গণমাধ্যমে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এক্ষেত্রে সাইবার অপরাধীরা পেমেন্ট সিস্টেমস হ্যাক করে দেশের ভেতরে এবং দেশের বাইরে থেকে এ অর্থ হাতিয়ে নেয়। উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশও এ ধরনের সাইবার সিকিউরিটি এবং হ্যাকিং সংক্রান্ত নিরাপত্তা হুমকিতে রয়েছে। এমতাবস্থায়, সম্ভাব্য সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যাংকের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থার নিরাপত্তা বাড়াতে কাজ করতে হবে।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে নিবিড় তদারকি নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে। বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবারও বড় ধরনের সাইবার হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রয়োজনীয় সাইবার সিকিউরিটি টিম না থাকায় তথ্য চুরির ঘটনা বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে দেরি হচ্ছে বলা হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ ইউনুসুর রহমানকে লেখা এক চিঠিতে এই আশঙ্কার কথা তুলে ধরেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। গত ৯ আগস্ট তিনি এই চিঠিটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠিয়েছেন।
মোস্তাফা জব্বারের লেখা চিঠিতে বলা হয়, সরকারী গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) সাইবার নিরাপত্তা টিম গঠন করেছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইবার নিরাপত্তা বাড়ানোর লক্ষ্যে সাইবার সেন্সর স্থাপন করা হয়েছে।
ওই সেন্সর থেকে প্রাপ্ততথ্য অনুযায়ী পরিলক্ষিত হয়, ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ কম্পিউটারে সাইবার অপরাধীরা ম্যালওয়্যার স্থাপন করেছে, যা ব্যবহারকারীর অগোচরে তার পরিচয় ও পাসওয়ার্ড কাজাখস্তান, রোমানিয়া, জাপান ও চীনে চিহ্নিত সাইবার অপরাধীদের কাছে সংবেদনশীল তথ্য অনবরত প্রদান করছে।
চিঠিতে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। চিঠিতে সতর্ক করে বলা হয়, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে এ বিষয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে চিঠিতে জানানো হয়।
এর আগে বিপুল পরিমান অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইবার থেকে হ্যাকিঙের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় আন্তর্জাতিক হ্যাকাররা। কিছুটা তুলে আনা গেলেও চুরি যাওয়ার তুলনায় তা ছিল নগন্য। এবার এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে বিষয়ে আগে থেকেই সংশ্লিষ্টদের সচেতন থাকতে হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply