আজ সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ফুটবল লড়াইয়ে, আসরের নাম সাফ সুুজুকি কাপ (সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ)। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে নেপাল ৩৩ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে।
নেপাল আছে ১৬১ আর বাংলাদেশ আছে ১৯৪ নম্বরে। অথচ বিস্ময়কর ব্যাপার হলো- সাফ ফুটবলে হিমালয়ের দেশ নেপাল কখনই শিরোপা জেতেনি! এই আসরে তাদের সেরা সাফল্য হচ্ছে দু’বার চতুর্থ স্থান অর্জন করা (১৯৯৫ এবং ১৯৯৯)। অথচ সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে একবার ২০০৩ সালে। এছাড়া ফাইনাল খেলেছে দু’বার (১৯৯৯ এবং ২০০৫)।
এখানেই শেষ নয়। ‘দ্য গুর্খালিস’ খ্যাত নেপাল এ পর্যন্ত ২১ বার মুখোমুখি হয়েছে ‘দ্য বেঙ্গল টাইগার্স’ খ্যাত বাংলাদেশের। বাংলাদেশের চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে ৩৩ ধাপ এগিয়ে থেকেও এই ২১ বারের মধ্যে তারা হেরেছে ১২ বার, আর জিতেছে মাত্র ৬ বার (বাকি ৩ ম্যাচ ড্র হয়)! গোলসংখ্যায়ও পিছিয়ে তারা (২৬-১৪)।
বাংলাদেশ আজ নামবে দুটি লক্ষ্য নিয়ে। প্রতিশোধ এবং গ্রুপসেরা হয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ নেপালের কাছে সাফে সর্বশেষ হেরেছিল ২০১৩ সালের ৩১ আগস্ট। সেবার তারা গ্রুপ ম্যাচে ০-২ গোলে হেরেছিল স্বাগতিক নেপালের কাছে। তবে সর্বশেষ সাক্ষাতে ঢাকায় ১-০ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশই।
২০১৫ সালের ১৭ ডিসেম্বরের ওই ম্যাচটি ছিল সাফের প্রস্তুতিমূলক এবং ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ। তবে দু’দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে অবশ্য কেউ জেতেনি। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের গ্রুপপর্বের ওই ম্যাচটি শেষ হয়েছিল গোলশূন্য ড্রয়ে। আজ নেপালকে হারাতে পারলে পাঁচ বছর আগের পুরনো হিসেব চুকাতে পারবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
আজ জিততে পারলে নিজেদের আরেকটি কীর্তিকে স্পর্শ করতে পারবে জেমি ডে’র শিষ্যরা। সেই ২০০৩ সালে সাফের পর গ্রুপপর্বে টানা তিন ম্যাচ জয়ের গৌরব। আজ থেকে ১৫ বছর আগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওই আসরে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে স্বাগতিক দল গ্রুপপর্বে একে একে হারিয়েছিল নেপালকে ১-০, মালদ্বীপকে ১-০ এবং ভুটানকে ৩-০ গোলে। চলতি আসরে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই হারিয়েছে ভুটানকে ২-০ এবং পাকিস্তানকে ১-০ গোলে।
পক্ষান্তরে নেপাল নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ১-২ গোলে হেরে গেলেও পরের ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দেয় ৪-০ গোলে হারিয়ে। ২ খেলায় ৩ পয়েন্ট নিয়ে তারা পয়েন্ট টেবিলে আছে চার দলের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে। পাকিস্তানেরও তাদের মতো সমান পয়েন্ট। তবে গোল তফাতে পিছিয়ে থাকায় পাকিরা আছে তিনে। আর ২ ম্যাচে শূন্য পয়েন্ট নিয়ে ভুটান আছে তলানিতে। আর সর্বোচ্চ ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বাংলাদেশ।
মজার এবং আশঙ্কার ব্যাপার- ৬ পয়েন্ট নিয়ে এখনও সেমিতে খেলা নিশ্চিত হয়নি বাংলাদেশের। বরং আজ তারা নেপালের কাছে হেরে গেলে বিপদ আছে। যদি ভুটানের বিপক্ষে পাকিস্তান জিতে যায় তাহলে সমীকরণের মারপ্যাঁচে পড়ে যাবে বাংলাদেশ। তখন বাংলাদেশ, নেপাল এবং পাকিস্তানের পয়েন্ট গিয়ে দাঁড়াবে ৬। গোলগড়ের পার্থক্যে শেষ চারে চলে যাবে দুই দল। সেক্ষেত্রে কপাল খারাপ হলে বাদও পড়তে পারে বাংলাদেশ!
বাংলাদেশের দর্শক এবং ফুটবলাররা নিশ্চয়ই সেই সমীকরনে যেতে চাইবেনা। আজই নিশ্চিত করে ফেলতে চাইবে সেমিফাইনাল। তবে পারবে কি-না, সেটি জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু সময়।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply