হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বেকারিতে জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জন নিহত হওয়ার মামলায় তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে ট্রাইব্যুনাল।
সাক্ষীরা হলেন, জঙ্গিদের বাড়ি ভাড়া দেয়া বাড়ির মালিক রিনা সুলতানা, আনোয়ারুল আজিম ও মমতাজ পারভীন।
বুধবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারক মো. মজিবুর রহমান তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করে আগামী ২৪ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেন।এ নিয়ে মামলাটিতে ৩১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো।
আনোয়ারুল আজিম জবানবন্দিতে বলেন- ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি এমএ হাসানসহ পাঁচজন থাকবে জানিয়ে আমার মিরপুর মধ্য পাইকপাড়া (বউবাজার) ১৫৯নং বাসায় ভাড়া ওঠে। হাসানের সাথে ইশতিয়াক আহমেদ, সুনীল রায়, রুবেল হোসেন এবং অজ্ঞাত আরও একজন বাসায় ওঠে। তাদের তেমন কোনো জিনিসপত্র ছিল না। তারা ফ্লোরে থাকতো। তারা প্রায় পাঁচ মাস ভাড়া থেকে বাসা ছেড়ে দেয়। পরে গুলশান হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর মিডিয়া এবং পুলিশের দেখানো ছবি দেখে চিনতে পারি আমার বাসায় যারা ভাড়া থাকতো এবং যারা আসা যাওয়া করতো তাদের মধ্যে ওই মৃত জঙ্গিরা কেউ কেউ ছিল। পরে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি, জঙ্গিরা আমার বাসায় চতুর্থ তলায় ভাড়া থেকে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিত। জঙ্গিরা ছদ্মনাম (ভুয়া নাম-ঠিকানা) ব্যবহার করে আমার বাসায় ভাড়া উঠেছিল। হাসান পরিচয় দেয়া জঙ্গি ছিল মূলত রাকিবুল হাসান রিগ্যান।
সাক্ষী কল্যাণপুরের জাহাজ বাগির মালিক মমতাজ পারভীন বলেন, ২০১৬ সালের ১৪ জুন ১২/১৪ জন ব্যাচেলর আমাদের কল্যাণপুরের বাসায় ভাড়ায় ওঠে। পরের মাস থেকে আরও কয়েকজন থাকত। ওই বছর ২৫ জুলাই রাত ১২টার পর আমার বাসার পঞ্চম তলায় পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানে ১১ জন ছাত্র মারা গেছে। পঞ্চম তলা থেকে রিগ্যান নামে একজন লাফ দেয়। আহত অবস্থায় পুলিশ তাকে আটক করে। পরে জানতে পারি তারা জঙ্গি সংগঠনের লোক ছিল। পুলিশ একদিন আমাকে থানায় নিয়ে যায়। চার/ সাড়ে চার মাস জেলে আটকে রাখে।
১৩৪, পশ্চিম মনিপুর, মিরপুর-২ এর বাড়ির মালিক রিনা সুলতানা বলেন- ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে পাঁচজন ছাত্র আমার বাসায় ভাড়া ওঠে। তারা খুব বাইরে বের হতো না। একদিন আমি তাদের বাসায় গিয়ে বলি, তোমরা তোমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ছবি দেবে। দুই দিন পরে গিয়ে দেখি ওরা চলে গেছে। এরপর পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি, আমার বাসায় যারা ভাড়া ছিল গুলশানের হামলার সাথে জড়িত ছিল।
সাক্ষ্যগ্রহণকালে আসামি মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন, শফিকুল ইসলাম ওরফে খালেদ, হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী ও হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন নিহত হন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply