এবার প্রায় ৬০ কোটি ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ড প্রকাশ্যে এসে পড়ার অভিযোগ উঠল প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। ঘটনার কথা স্বীকার করে মেরামতিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে ফেসবুক। প্রতিটি গ্রাহককে তা জানানো হবে বলেও দাবি প্রতিষ্ঠানটির। গ্রাহক সুরক্ষার প্রশ্নে ফের কাঠগড়ায় ফেসবুক।
ফেসবুকের প্রতিটি পাসওয়ার্ডই এনক্রিপটেড বা সাংকেতিক ভাবে থাকার কথা। যাতে তা কোনও ভাবেই কারও নজরে না আসে। অভিযোগ, সাংকেতিক ভাবে না থেকে তা রয়েছে টেক্সট হিসাবে। ফলে তা সহজেই ফেসবুক কর্মীদের হাতের মুঠোয় এসে যাচ্ছে। এর মধ্যে ফেসবুক ছাড়াও রয়েছে ফেসবুক লাইট, ইনস্টাগ্রামের পাসওয়ার্ড।
ঠিক কী হয়েছে?
গত জানুয়ারিতে নিয়মমাফিক সুরক্ষা পর্যালোচনার সময় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ দেখেন, সংস্থার ইন্টারনাল স্টোরেজ সিস্টেমে কোটি কোটি ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ড সহজেই দেখা যাচ্ছে। সার্ভারে তা সাংকেতিক ভাবে জমা থাকার কথা থাকলেও দেখা গিয়েছে, তা রয়েছে সাধারণ টেক্সট হিসাবে। ফলে তা সহজেই পড়া যাচ্ছে। সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারিং, সিকিউরিটি ও প্রাইভেসি বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কানাহটি বলেন, ‘আমাদের লগইন সিস্টেম এমন ভাবে ডিজাইন করা যাতে তা প্রতিটি পাসওয়ার্ডকে ঢেকে রাখা যায়। ফলে তা কোনও ভাবেই পড়া যায় না।’ পেদ্রোর দাবি, সাধারণ টেক্সট হিসাবে পাসওয়ার্ডগুলি দেখা যেতেই নড়েচড়ে বসেন তাঁরা।
যদিও ব্রায়ান ক্রেগ নামে সাইবার সুরক্ষা বিষয়ক এক মার্কিন সাংবাদিক তাঁর ব্লগে দাবি করেন, অতি সম্প্রতি নয়, ২০১২ থেকে এ ভাবেই কোটি কোটি পাসওয়ার্ড জমা হচ্ছে ফেসবুকের ইন্টারনাল সার্ভারে। এবং সংস্থার প্রায় ২০ হাজার কর্মী তা সহজেই দেখতে পারছেন। ‘ক্রেবসনসিকিউরিটি’ নামক ওই ব্লগে ব্রায়ানের আরও দাবি, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেসবুকের এক কর্মী তাঁকে জানিয়েছেন, ফেসবুক কর্মীরা এমন একটা অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছেন যা দিয়ে ইন্টারনাল সার্ভারে ওই আনক্রিপটেড পাসওয়ার্ডগুলি সাধারণ টেক্সট হিসাবে জমা করা যায়। এর পরই সুরক্ষার ব্যর্থতা নিয়ে একাধিক অন্তর্তদন্ত শুরু করে ফেসবুক।
গোটা বিষয়টিই সামলে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন পেদ্রো। তাঁর কথায়, ‘এখনও পর্যন্ত এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি যাতে দেখা গিয়েছে, ওই ডেটাগুলির অপব্যবহার হয়েছে।’ সংস্থার বাইরে অন্য কেউ ওই পাসওয়ার্ডগুলি দেখেননি বলেও দাবি তাঁর। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোটি কোটি ফেসবুক, ফেসবুক লাইট ও ইনস্টাগ্রাম ইউজারদের এ বিষয়টি জানানো হবে।
তবে ফেসবুকে এই আশ্বাসে সংস্থার ভাবমূর্তি কতটা স্বচ্ছ হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। গত এক বছরে ফেসবুকের বিরুদ্ধে একাধিক বার ইউজারদের ব্যক্তিগত তথ্যফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তাঁর সহপাঠী অ্যারন গ্রিনস্প্যান। এ বার পাসওয়ার্ড-কাণ্ডে ফের নতুন করে বিতর্কে ফেসবুক।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply