দেশের ব্যাংকিং খাত যে দিন দিন আরও বেশী ঘোর সংকটের মধ্যে যাচ্ছে সে বিষয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না। ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থার চিত্র তুলে ধরে ঘোর সংকটের পূর্বাভাস কে আরও বেশী ত্বরান্বিত হওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুললেন রাষ্ট্রের অর্থ ব্যবস্থার অভিভাবক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মহান জাতীয় সংসদে দাড়িয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান রাষ্ট্রায়ত্ত ৪ টি ব্যাংক সহ মোট ৭ টি মূলধনের ঘাটতি পৌঁছে গেছে ৯ হাজার কোটি টাকায়।
এই ৭ ব্যাংকের মোট মূলধন ঘাটতি ৯ হাজার ৪১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা,যা গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিসাব।
গতকাল স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদে বৈঠক শুরু হওয়ার পর স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল মতিনের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এই তথ্য জানান।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের তথ্য মতে,রাষ্ট্রায়ত্ব চার ব্যাংক সোনালী,রূপালি,জনতা ও বেসিক ব্যাংকের ই মু্লধনের ঘাটতি ৭ হাজার ৬২৬ কোটি ২০ লাখ টাকা। এই চারটি ব্যাংক ছাড়া বেসরকারি তিনটি ব্যাংক -বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক,ফার্মাস ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি ১ হাজার ৭৯১ কোটি ২০ লাখ টাকা।
প্রশ্নোত্তর পর্বে অর্থমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়,গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে সোনালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি তিন হাজার ১৪০ কোটি ৪১ লাখ টাকা, রূপালী ব্যাংকের ৬৮৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা, জনতা ব্যাংকের এক হাজার ২৭২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা এবং বেসিক ব্যাংকের ঘাটতি দুই হাজার ৫২২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঘাটতি ২৩১ কোটি ৩১ লাখ টাকা, ফারমার্স ব্যাংকের ৭৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি এক হাজার ৪৮৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা।দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মূলধনের ঘাটতিপ্রকট আকার ধারণ করেছে সে বিষয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী জানান,রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে ২০০৫-২০০৬ অর্থবছর থেকে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছর পর্যন্ত সরকার ১০ হাজার ২৭২ কোটি টাকার পুনঃমূলধনীকরণ সুবিধা দিয়েছে। যা ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলোতে মূলধন হিসাবায়নে যুক্ত হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে মহান জাতীয় সংসদ কে আরও জানান,২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকে প্রভিশন ঘাটতি ছিল সাত হাজার ৫৬৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এ সময়ে বেসরকারি ব্যাংকে উদ্বৃত্ত প্রভিশন রয়েছে এক হাজার ৭৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সামগ্রিকভাবে মোট ঘাটতি প্রভিশনের পরিমাণ ছিল ছয় হাজার ৩৪৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে দেওয়া তথ্য অনুসারে আরও জানা যায়,২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকে প্রভিশন ঘাটতি ছিল সাত হাজার ৫৬৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এ সময়ে বেসরকারি ব্যাংকে উদ্বৃত্ত প্রভিশন রয়েছে এক হাজার ৭৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সামগ্রিকভাবে মোট ঘাটতি প্রভিশনের পরিমাণ ছিল ছয় হাজার ৩৪৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য যে, দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার এই সংকটের জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী পদত্যাগ দাবি করেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন বাবলু।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply