চিত্রনায়িকা প্রয়দর্শিনী মৌসুমী সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন ফরম ক্রয় করার পর থেকেই তাকে নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে। কারণ হঠাৎ করেই তিনি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। মনোনয়ন ফরম ক্রয় করার পর থেকেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে তার অনুভূতি জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। সবার সুবিধার কথা বিবেচনা করেই আজ দুপুরে মৌসুমী এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সেখানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মৌসুমী। সেসময় মনোনয়ন ফরম ক্রয় নিয়ে মৌসুমী বলেন, আমি সুন্দর একটা সময়ের জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। এবার নির্বাচনের সময়ে কারো কারো সঙ্গে আলাপও করে রেখেছিলাম যে, এবার নির্বাচন সুন্দরভাবে হলে আমি সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনবো। অবশেষে ফরম কিনলাম। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে নির্বাচনের পর রাজনীতিতে যে সুন্দর পরিবেশ দেখলাম তা আমাকে আকৃষ্ট করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি কথা আমার খুব ভালোলেগেছে। তা হচ্ছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোনো রকম তদবীর ছাড়া নিজে এই সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন দেবেন। এই বিষয়টি আমাকে খুব আকৃষ্ট করেছে। আমার কাছে এটি খুব পজিটিভ মনে হয়েছে। এটাই আমার প্রাইম টাইম মনে হয়েছে।
এই অভিনয় জীবনের পঁচিশ বছরে আমার অভিনয় দিয়ে জনগণের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। এবার জনগণকে দেবার সময় আমার। আর কোনো দলের হয়ে কাজ করার সময় এসেছে বলে মনে হয়েছে আমার। আর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করার যদি সুযোগ হয় সেটা তো আরো পজিটিভ হয় আমার জন্য। সে চিন্তা থেকেই মূলত এই মনোনয়ন ফরম কেনা।
মৌসুমী আরো বলেন, নারী ও শিশু বিষয়ক সংগঠনের সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন কাজ করেছি। ‘ইউনিসেফ’ ছাড়াও নিজের সংগঠন থেকে নারী ও শিশুদের নিয়ে আমি কাজ করেছি। সব কিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে যে দল ক্ষমতায় আছে সে দল সুন্দরভাবে আমাকে যদি সার্পোট দেয় এবং সেই দলের হয়ে যদি আমি কাজ করি তাহলে আমি আমার কাজগুলোকে আরো বড় পরিসরে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। সরকার থেকে এখন নারী উন্নয়নের জন্য অনেক কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে। যেটা খুবই পজিটিভ। মৌসুমীকে প্রশ্ন করা হয় যে, মনোনয়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ দলের উচ্চ পর্যায় থেকে শোনা যাচ্ছে যে, দলের দুসর্ময়ে যারা যুক্ত ছিলেন তাদেরকে মনোনয়ন নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হবে। তাহলে আপনি কিভাবে সংরক্ষিত আসনে এবার নির্বাচিত হবেন বলে মনে করছেন? উত্তরে মৌসুমী বলেন, দলের দু:সময়ে যারা ছিল তাদেরকে অব্যশই আগে সুযোগ দেওয়া উচিত। তার মানে এই না, যারা গতকাল জন্মগ্রহন করেছেন দলে তাদের মেধাকে গুরুত্ব দেয়া যাবে না। আর প্রধানমন্ত্রী সেটা ভাবেন না বলে মনে করি আমি। কারণ এবারের নির্বাচনের পর মন্ত্রীসভায় এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী সেই চমক দেখিয়েছেন।
যাদের মেধা ও জনপ্রিয়তার পাশাপাশি সুন্দর স্বপ্ন আছে, ভালো পরিকল্পনা আছে তাদেরকে মনোনয়ন কেনার জন্য আহ্বান করা হয়েছে। আর আমাদের ফিল্মে কি হয়, বেশি সময় কাজ করার পর সরে দাঁড়ায় একজন শিল্পী এবং নতুনদের কাজের সুযোগ করে দেয়। তার মানে এই না যে, আমি ফিল্ম থেকে ভ্যানিস হয়ে গেছি। আমার কাজ নতুনদের সাপোর্ট দেয়ার এবং আমার জায়গা থেকে যতটুকু কাজ করার আমি করে যাব, এই তো। রাজনীতিতেও তাই। ফিল্মের মত রাজনীতিতেও মানুষের মন বুঝে জনগণের সেবা করতে হবে। সততার সাথে নিষ্ঠার সাথে, ভালোবাসার সঙ্গে জনগনের জন্য যে কাজটা করবে তারই তো রাজনীতিতে আসা উচিত। এদিকে ভিন্ন একটি রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া মৌসুমীর কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরইমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। এ বিষয়ে মৌসুমী বলেন, আমি এটা নিয়ে ভাবছি না। মনোনয়ন দিবেন তো প্রধানমন্ত্রী, তাই এটা নিয়ে আমি চিন্তিত না। কারণ প্রধানমন্ত্রী খুব ভালো করে জানেন, কে কি করছে, কে কি ভাবছে। তার বোঝার মত সুন্দর একটি মন আছে।
আমি কোনো দলের সঙ্গে কখনো কাজ করিনি। তারকাদের নানা সময় নানা জায়গায় যেতে হয়। অনেক অনুষ্ঠানে গিয়ে ছবি তুলতে হয়। আমিও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়েছি। তার মানে এই না যে, আমি নির্দিষ্ট করে কোনো দল করি। তবে এটা ঠিক যে, প্রকাশ্যে আমি রাজনীতি না করলেও মন থেকে আ’লীগকে সমর্থন করে আসছি। এ কারণেই একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য মনোনয়নপত্র এবার সংগ্রহ করেছি। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত আল্লাহ কী করেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply