ভেনিজুয়েলার ২০ টন স্বর্ণ রাশিয়া নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন দেশটির বিরোধী দলের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক সদস্য জোস গুয়েরা। তিনি জানান, তার কাছে তথ্য রয়েছে-২০ টন স্বর্ণ বিমানে নেওয়া হয়েছে তা দেশটির শেয়ারের ২০ শতাংশের পরিমাণ। ওই আইনপ্রণেতা বলেন, যখন বিমানটি মস্কোতে পৌঁছায় ওই পরিবহনের জন্য কার্গো প্রস্তুত ছিল।
তবে এ তথ্যকে অস্বীকার করেছে ক্রেমলিন। এটিকে তারা ভুয়া সংবাদ হিসেবে আখ্যায়িত করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেন, সাধারণ জনগণের কাছে এটি গুজব ছড়ানো হয়েছে।
এমন বিবৃতির প্রতিবেদন ব্লুমবার্গ করেছিল। এছাড়া পশ্চিমা অনেক সংবাদমাধ্যমে এসেছে। ওই গুজব প্রসার হয়েছিল গণমাধ্যমের কারণে। এতে দাবি করা হয়েছিল, রাশিয়ার নর্ডউইন্ড এয়ারলাইন্সের রহস্যজনক বোয়িং ৭৭৭ যেটি ৪০০ যাত্রী বহন করতে পারে। যেটি মস্কো থেকে এটি উড্ডয়নের পর একটি স্থানীয় বিমানবন্দরে যায়।
ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র জোর দিয়ে বলেন, ক্ষমতার পরিবর্তন চাওয়া ভেনিজুয়েলায় চলমান ঘটনাবলিতে আন্তর্জাতিক আইন, সার্বভৌমত্ব ও একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিষয়ে প্রগতিশীল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়েছে। ভেনিজুয়েলার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে তৃতীয় দেশ অংশগ্রহণ করতে পারে না।
গত বুধবার দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনিজুয়েলারি বিরোধীদলীয় নেতা জোয়ান গুইডো নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণার পর সেনাবাহিনীর সহায়তা চেয়েছেন।
এদিকে সমাজতন্ত্রী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদলীয় নেতা জোয়ান গুইডোকে দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বেশ কয়েকটি দক্ষিণ আমেরিকার দেশও তাকে সমর্থন জানিয়েছে।
অন্যদিকে ২০১৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা তেলসমৃদ্ধ দেশটির সমাজতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন।
জোয়ান গুইডো নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণার কিছুক্ষণ পর যুক্তরাষ্ট্র তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে তার পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে। কানাডা, ব্রাজিল ও কলোম্বিয়াও যুক্তরাষ্ট্রের মতো হুবহু বিবৃতি দিয়েছে। এদিকে মাদুরোর পক্ষে রাশিয়া, তুরস্ক ও চীনসহ বেশ কয়েকটি শক্তিশালী দেশ অবস্থান নিয়েছে।
ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে এক সমাবেশে মাদুরোর বিরুদ্ধে ক্ষমতা জবরদখলের অভিযোগ করেন গুইডো। পরে অতিমুদ্রাস্ফীতিতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া অর্থনীতিকে উদ্ধার করতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জবরদখলের অবসান ঘটাতে প্রেসিডেন্টের সব ক্ষমতা গ্রহণের আমি শপথ নিয়েছি।
গুইডোর ঘোষণা ভেনিজুয়েলাকে এমন পরিস্থিতির মধ্যে নিয়ে যেতে পারে, যেখানে ক্ষমতাসীন সরকারের পাশাপাশি বিরোধীরাও একটি সমান্তরাল সরকার চালাতে পারেন। তবে বিদেশি স্বীকৃতি থাকলেও রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকছে না।
এদিকে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে টেলিভিশনে সম্প্রচার করা এক ভাষণে বিরোধীদের বিরুদ্ধে মার্কিন সমর্থনে অভ্যুত্থানের অভিযোগ তোলেন মাদুরো। তার অভিযোগ, বিরোধীরা ওয়াশিংটন থেকে সরকার পরিচালনা করতে চাচ্ছেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply