গত ১০ বছরে দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ভর্তি ও পাসের হার, বৃত্তি-উপবৃত্তি—সবই তরতরিয়ে বেড়েছে। কিন্তু অর্জনগুলো ম্লান করে দিচ্ছে নীতি-সিদ্ধান্তের দোদুল্যমানতা, পরীক্ষার আধিক্য, প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং নানা দুর্নীতি ও অনিয়ম। আর শিক্ষাবিদেরা বলছেন, এভাবে শিক্ষার মান নেমে যাচ্ছে।
শিক্ষাবিদদের পরামর্শ হলো, সংখ্যার বদলে নতুন সরকারের উচিত হবে শিক্ষার গুণগত মানের ওপর জোর দেওয়া। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন।
গত এক দশকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে শিক্ষার্থীদের নতুন বই দেওয়া, প্রায় সব শিশুকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করা, সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে ছেলে-মেয়ের সমতা আসার মতো লক্ষ্যগুলো অর্জিত হয়েছে। এই সময়ে ২৬ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি হয়েছে। যেসব উপজেলায় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ নেই, সেগুলোতে একটি করে বিদ্যালয় ও কলেজ সরকারি হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নিয়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে। এ ছাড়া অনলাইনে ভর্তিপ্রক্রিয়া চালু, লটারির মাধ্যমে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির উদ্যোগ ছিল ইতিবাচক।
এই সময়ে প্রস্তুতি ছাড়াই সৃজনশীল পদ্ধতির আওতা বাড়িয়ে প্রায় সব বিষয়ে চালু করা হয়। বাড়ানো হয়েছে পরীক্ষা ও বইয়ের বোঝা। আছে শিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। শিক্ষাবিদেরা বলছেন, জাতীয় শিক্ষানীতিসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে পরিস্থিতি এত খারাপ হতো না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. সোহরাব হোসাইন গতকাল বলেন, শিক্ষায় অনেক অগ্রগতি আছে। এর মধ্যে সংখ্যার দিকে এত দিন জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মান বাড়ানোর চেষ্টাও ছিল। তবে এখন মান বাড়ানোই মূল লক্ষ্য। সে লক্ষ্যে শিক্ষাক্রম সংশোধন, পরীক্ষাব্যবস্থা নিখুঁত করা, শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ যা যা করা প্রয়োজন, সেগুলো করা হবে।
গত ১০ বছরে দুই মেয়াদে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। শুরুতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বও তিনি পালন করেছেন। এরপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রথম দফায় আফছারুল আমীন এবং দ্বিতীয় মেয়াদে মোস্তাফিজুর রহমান দায়িত্ব পালন করেন। নতুন মন্ত্রিসভায় তাঁরা স্থান পাননি।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply