মেয়েরা এখন সব জায়গায় এগিয়ে গেছে এবং ছেলেরা যা পারে মেয়েরা তার চেয়ে ভালোই পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এখন মেয়েরা সব জায়গায় এগিয়ে গেছে। চাকরি-বাকরি, খেলাধুলা সব ক্ষেত্রে তারা এগিয়ে। এমনকি আমাদের মেয়েরা কিন্তু এভারেস্টও জয় করে ফেলেছে। ছেলেরা যা পারে মেয়েরা তার থেকে ভালোই পারে।
শনিবার (৯ মার্চ) দুপুরে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘জাতির পিতা নারীদের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা প্রথম যে সংবিধান দিলেন সেখানে তিনি মেয়েদের জন্য সংরক্ষিত নারী আসন দেন। তিনি মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করে দিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, একজন মেয়ে যদি অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীনতা অর্জন করে তাহলে সমাজে তার ভালো অবস্থান হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগে জুডিশিয়াল সার্ভিসে কোনও নারী চাকরির সুযোগ ছিল না। বঙ্গবন্ধু এই আইন বাতিল করে দিয়েছেন। ‘৯৬ সালে উচ্চ আদালতে একজনও নারী বিচারক ছিলেন না। ওই সময় নাজমুন আরা ছিলেন জেলা জজ ছিলেন। আমরা ক্ষমতায় এসে তাকে হাইকোর্টে নিয়ে আসি। এরপর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলে তার ১০ শতাংশ কোটায় জুডিশিয়াল সার্ভিসে নারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া স্থানীয় সরকার আইনে সংরক্ষিত আসন করে দিয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন অনেক ধর্মীয় নেতা নারী শিক্ষার বিরোধিতা করে। আমি তাদের বলতে চাই বিবি খাদিজা একজন ব্যবসায়ী ছিলেন এবং তিনিই প্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। কোনও পুরুষ তখন সাহস করেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনীতে এখন অনেক নারী কাজ করেন। এমনিতে নারী পাইলট আছেন। আগামীতে বিমান বাহিনীতে ফাইটার জেট চালাবে নারীরা। নৌবাহিনীতে আমাদের মেয়েরা সবচাইতে ভালো কাজ করছেন। সেনাবাহিনীতে একসময় মেয়েদের জায়গা ছিল না। ৯৬’ সালে আমি এসে সব চালু করে দেই। এক সময় কোনও নারী সচিব ছিল না। আমি প্রথম কয়েকজন নারীকে সচিবের পদমর্যাদা নেই। জেলা ডিসি, এসপির পদে মেয়েদের বাধা ছিল। তখন একটা প্রশ্ন ছিল, মেয়েরা কীভাবে এসপি হবে? আমি যাকে প্রথম নারী এসপি করে মুন্সীগঞ্জে আনলাম তিনি দায়িত্ব নিয়েই ডাকাত ধরে ফেললো। তার এ কাজের সঙ্গে আমিও জয়ী হয়ে গেলাম। আজকে শান্তি রক্ষা মিশনেও অনেক ভালো কাজ করছে, পারদর্শিতা দেখাচ্ছে।’বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগে মাতৃত্বকালীন ছুটি ছিল ৩ মাস। এর মধ্যে এক মাস বেতন পেতেন। পরে আমি ক্ষমতায় এসে প্রথমে মাতৃত্বকালীন ছুটি চার মাস করি। পরে ৬ মাস ছুটি দিয়েছি বেতনসহ।’
মেয়েরা খেলাধুলায়ও অনেক এগিয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে প্রথমে প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট করতে পারিনি, প্রবল বাধা ছিল। এরপরে আমরা প্রাথমিকভাবে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করলাম। আমাদের নারী জাতীয় ক্রিকেট দল টি-টুয়েন্টি ২০২০ এ জায়গা করে নিয়েছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধেও নারীরা পিছিয়ে ছিল না। ৯৭-৯৮ সালে নারী উন্নয়ন নীতিমালা করেছিলাম। পরবর্তীতে জাতীয় উন্নয়ন নীতি-২০১১ প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করছি। আমরা এরই মধ্যে কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল নির্মাণ করছি। অনেক হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে উপজেলা পর্যায়ে নির্মাণ করা হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply