চকবাজার এলাকার কিশোর সিজান হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকুসহ মূল অভিযুক্ত মোঃ ইমন (১৯) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই)।
পিবিআই হতে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১১ মার্চ ২০১৯ রাত সোয়া এগারটায় কক্সবাজারের লাইট হাউজ এলাকা হতে ইমনকে গ্রেফতার করে পিবিআই। পুলিশ তার হেফাজত হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ১টি সুইজ গিয়ার চাকু ও ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। এই ঘটনায় আজ (১২ মার্চ, ২০১৯) সকাল ০৮.৪০ টায় বংশাল এলাকা হতে আরেক অভিযুক্ত মোঃ মুন্না মিয়া(১৮) গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, মামলার ভিকটিম সিজান ওরফে বক্সার (১৫) একজন গ্রিল ওয়ার্কসপ কর্মচারী হিসেবে নাজিরা বাজার এলাকায় কাজ করতো। গত ০৭/০৩/২০১৯ খ্রিঃ রাত্র অনুমান ১০.৫০ টায় কাজ শেষে বাসায় আসে এবং খাওয়া দাওয়া শেষ করে বাসায় থাকাকালীন রাত্র অনুমান ১১.২০ টায় তার ব্যবহৃত মোবাইলে একটা কল আসে। তখন কথা বলতে বলতে সিজান ওরফে বক্সার বাসা থেকে বের হয়ে যায়। রাত্র অনুমান ১২.১০ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক ব্যক্তি সিজান ওরফে বক্সার এর পরিবারকে ফোনে জানায়, সিজান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে, তার জন্য রক্তের প্রয়োজন এবং দ্রুত সেখানে যেতে বলেন। উক্ত সংবাদ পাওয়ার পর সিজান এর পরিবারের লোকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান এবং সেখানে সিজান ওরফে বক্সারকে মুমূর্ষ অবস্থায় দেখতে পান। পরে চিকিৎসারত অবস্থায় সিজান ওরফে বক্সার গত ০৮/০৩/২০১৯ খ্রিঃ রাত্র ২.১০ টায় মৃত্যুবরন করে।
পরবর্তী সময়ে ভিকটিমের পরিবার জানতে পারেন, ১৪নং বকসি বাজার রোড, (ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর দক্ষিণ পাশে) পাকা রাস্তার উপর অজ্ঞাতনামারা ভিকটিম সিজান ওরফে বক্সারকে উপর্যুপরি শরীরে বিভিন্নস্থানে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে একজন রিক্সাচালক ভিকটিমকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতাল গেইটে রেখে যায়।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের বাবা গত ১০ মার্চ, ২০১৯ অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে চকবাজার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। চকবাজার মডেল থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ঢাকার একটি বিশেষ টিমও অভিযানে নামে। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের সাহায্যে কক্সবাজার ও বংশাল এলাকা হতে তাদের দু’জনকে গ্রেফতার করে। আর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে ক্লু-লেস সিজান ওরফে বক্সার হত্যা মামলার রহস্য।
গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, বংশাল ও চকবাজার থানার সুরিটোলা, চানখারপুল ও মালিটোলা এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি সিনিয়র-জুনিয়র গ্রুপ বিদ্যমান। যার একটি ইমন সমর্থিত এবং অন্যটি সিজান সমর্থিত। এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে উক্ত গ্রুপ দুটির মধ্যে অনেকদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার অনুমান এক/দেড় মাস পূর্বে এলাকায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সিজান এর সাথে ইমনের কথা কাটাকাটি হয়। উক্ত কথা কাটাকাটির জের ধরে সিজান গ্রুপের লোকজন ইমনের গ্রুপের একজনকে ছুরিকাঘাত করে আহত করে।
উক্ত ঘটনার পর ইমন ও মুন্নাসহ অপরাপর সহযোগিরা সিজানকে ঘটনার দিন রাতে মোবাইল ফোনে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ইমন ও মুন্নাসহ তার অপরাপর সহযোগীরা পরস্পর যোগসাজসে ঘটনাস্থলে সিজানকে বিভিন্নস্থানে ধারালো চাকু দ্বারা রক্তাক্ত যখম করে পালিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিম মারা যায়।
হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply