বিশ্বব্যাপী ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস পণ্য এখন মানুষের নিত্য ব্যবহারের সঙ্গী হয়ে উঠছে। ডিজিটাল ও উচ্চ প্রযুক্তিনির্ভর ডিভাইস যেমন স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, কম্পিউটার, টিভি, ফ্রিজ, ওভেনের মতো পণ্যগুলো জীবনকে অনেক সহজ করেছে। কিন্তু এসব ডিভাইস ব্যবহারের কয়েক বছর পর কর্মক্ষমতা শেষ হলে যেখানে সেখানে ফেলে দেয়া হচ্ছে। ব্যাপক চাহিদার কারণে এসব পণ্যের জীবনচক্রও অনেক ছোট হয়ে এসেছে। বহু ইলেকট্রনিক ডিভাইস মেরামত বা পুনরায় ব্যবহার উপযোগী নয়। এ কারণে ইলেকট্রনিক বর্জ্য বা ই-বর্জ্যরে পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে।
প্রতিনিয়তই এই সমস্যা বাড়ছে। ২০১৪-১৬ সালের মধ্যবর্তী সময়ে উৎপাদিত ই-বর্জ্যরে পরিমাণ ৮ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সাল নাগাদ ই-বর্জ্যরে পরিমাণ আরো ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। ইউনাইটেড নেশনস ইউনিভার্সিটি ও ইন্টারন্যাশনাল সলিড ওয়েস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস ইউনিয়নের (আইটিইউ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই ওঠে এসেছে।
ই-বর্জ্য উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে চীন। ই-বর্জ্য উৎপাদনে শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ই-বর্জ্য উৎপাদনে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে আছে যথাক্রমে জাপান ও ভারত। শীর্ষ ই-বর্জ্য উৎপাদনকারী দেশগুলোর তালিকায় এর পরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে জার্মানি, ব্রাজিল, রাশিয়া, ফ্রান্স, ইন্দোনেশিয়া ও ইতালি।
সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে ই-বর্জ্য পরিবেশ ও মানুষের শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান ই-বর্জ্য নিয়ে পর্যালোচনা ও ব্যবস্থাপনায় সহায়তা দিতে জাতিসঙ্ঘের কয়েকটি এজেন্সি এরই মধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের কর্মক্ষমতা শেষে সঠিক ব্যবস্থাপনা বা রিসাইকেল না করে উন্মুক্ত স্থানে ফেলে রাখলে মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
বিশ্বব্যাপী এখন মাত্র ২০ শতাংশ ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঠিকভাবে রিসাইকেল করা হচ্ছে এবং বাকি ৮০ শতাংশই খোলা জায়গায় ফেলা হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কী পরিমাণ ই-বর্জ্য উৎপাদন হচ্ছে এবং এসব বর্জ্য কোথায় যাচ্ছে, তা পর্যালোচনা ও ব্যবস্থাপনায় সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতিসঙ্ঘের একাধিক সংস্থা।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডিঃ / ক.আ।
Leave a Reply