কক্সবাজার সদরের ইসলামাবাদের টেকপাড়া জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুর রশিদের উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ১০ এপ্রিল ভিকটিম নিজেই বাদি হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। এতে ঘটনার অন্যতম নায়ক মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা হিসেবে চিহ্নিত ইসলামাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান নুর ছিদ্দিক সহ ৪ জনকে এজাহার ভুক্ত আসামী করা হয়েছে। মামলার ১ নং আসামী ইসলামাবাদ ইউনিয়নের টেকপাড়ার মৃত মোহাম্মদ ফকিরের ছেলে নুরুচ্ছবি(২৬) ও ২ নং আসামী একই ইউনিয়নের মৃত নজুমুদ্দিনের ছেলে জাফর আলম(৫০) কে মঙ্গলবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বাকি দুই আসামী চেয়ারম্যান নুর ছিদ্দিক(৬৫), তার ছেলে ইমরুল কায়েস(২৭) পলাতক রয়েছে। তাদের খোঁজে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এজাহার সুত্রে জানা গেছে, মসজিদে মাদকের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ায় স্থানীয় ইমাম মাওলানা আব্দুর রশিদকে রাত ভর নির্যাতন চালায় মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। নেয়া হয় উলঙ্গ নগ্ন করে ভিডিও ও জোর পূর্বক স্বীকারোক্তি। গত ৭ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০ টা থেকে পরের দিন বিকাল পর্যন্ত বিকাল ৪ টা পর্যন্ত এক দফা নির্যাতনের ঘটনা বিভিন্ন সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ঘটনার প্রতিবাদ করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ৯ এপ্রিল কক্সবাজার শহরে সংবাদ সম্মেলন ডেকে ঘটনার জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন। এই দাবিতে ১০ এপ্রিল বিকালে ঈদগাঁওতে আলেম সমাজ সহ সাধারন মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে।
ভিকটিম হাফেজ মাওলানা আব্দুর রশিদ টেকপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ও হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ’র ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক।
মাওলানা আবদুর রশিদ জানান আমি পেশায় এক জন মসজিদের ইমাম। তাই আমি প্রায় সময় মসজিদে বয়ান করার সময় মাদক সেবন ও মাজার পুজারী বিদ’আত এর বিরুদ্ধে কথা বললে বিবাদীরা উক্ত বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় তর্কাতর্কি করে হুমকি ধমকি প্রদান করে। তারই ধারাবাহিকতায় আমাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, লাথি মারে। আমি দান বাক্সের টাকা চুরি এবং বলৎকার করিয়াছি মর্মে স্বীকাররোক্তি রেকর্ড করে। তিনি আরো বলেন হামলা করে আমার পকেটে থাকা নগদ ১১,৫৫৬ টাকা এবং ব্যবহারের মোবাইলটিকে কেড়ে নেয়।
তিনি বলেন, আমার স্ত্রী আসমা, মেয়ে জুলেখা, নুসরাত এবং আমার বয়োবৃদ্ধ পিতা বিবাদীকে পায়ে ধরে আমাকে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি মিনতি করে। কিন্তু আসামীরা আমাকে আটকে রাখে। আমাকে মেরে ফেলবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়। সকল আসামিরা আমাকে হুমকি দিয়ে বলে উক্ত বিষয়ে থানায় অভিযোগ কিংবা মামলা করলে আমার কথিত রেকর্ড শুনিয়ে আমার বিরুদ্ধে উল্টো মামলা করবে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি(তদন্ত) খাইরুজ্জামান এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন এরকম এক জন সম্মানিত ইমামকে হামলা ন্যাক্কারজনক। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। হামলাকারী ১নং আসামী নুরুচ্ছবিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply