কামরান আহমেদ রাজীব কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ সাড়া দেশে নারী নির্যাতন বেড়ে চলেছে। নুসরাতের পর এবার কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের শালদাহ গ্রামের চুমকি খাতুন (২৪) কে গত শুক্রবার দিনভর শারীরিক নির্যাতনের পর রাতে গালে হারপিক ঢেলে হত্যার চেষ্টা চালায় শশুর বাড়ির লোকজন। এমনটি অভিযোগ করেন চুমকি খাতুন। চুমকি খাতুন জানান, গত ৪ এপ্রিল কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের শালদাহ গ্রামের রাশিদুলের ছেলে করিমূল সালেহীন ওরফে তায়েব আমাকে ফুঁসলিয়ে আমার মেয়েকে সহকারে ঢাকা নিয়ে যায় এবং পরের দিন বিবাহ করে।
আমরা ঢাকাতে ভালোয় ছিলাম। গত ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার করিমূল সালেহীন ওরফে তায়েব কে ফুঁসলিয়ে তার পিতা রাশিদুল হক হরিপুর শালদাহ গ্রামের বাড়ি নিয়ে যায়। বাড়িতে আসার পরের দিন সকাল থেকে তায়বের ফুপু নাসিমা, তোয়বের বড় বউ শারমিন আক্তার বন্যাসহ পরিবারের লোকজন মারধর করতে থাকে এর এক পর্যায়ে সন্ধ্যার পর আমি প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পরি তখন আমার মুখ চেপে ধরে গালের মধ্যে বিষ ঢেলে দেয়। এরপর আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করে সবাই সেখান থেকে সরে পড়ে। এর পর থেকেই আমার মা আমার দেখাশোনা করছেন।
আমার বাবা থানায় অভিযোগ দিলেও এখনও পর্যন্ত মামলা হয়নি। তিনি আরো বলেন, তায়েবের চাচা আইকর আইনজীবী জহুরুল ইসলাম তার নির্দেশে আমাকে নির্যাতন করা হয়েছে। সে টাকা দিয়ে আমাকে ছাড়িয়ে দিতে বলেছে। একথা বলতে বলতে চুমকি বলে উঠছে আমি আর বাঁচবো না। আমার সাড়া দেহ জ্বালাপোড়া করছে। আজ দুপুরে শালদাহ এলাকার মেম্বারসহ কয়েকজন এসে টাকা দেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা টাকা নেয়নি। পরে পুলিশ তদন্তে আসে এর পর আমি জানতে পারি আমাকে রিলিজ করে দিয়েছে। পরে হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ তাপস কুমার সরকার এর রিলিজ বাতিল করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার নির্দেশ দেন। কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ তাপস কুমার সরকার জানান, চুমকিকে হারপিক খাওয়ানো হয়েছে। তার শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। আরো কয়েকদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা লাগবে। কয়েকদিন পর আরো সমস্যা হতে পারে।
মেয়েটির মা জানান, আমার এক ছেলে এক মেয়ে। আমার মেয়ে বড়। আমার মেয়েকে যারা এভাবে নির্যাতন করেছে আমি তাদের শাস্তির দাবি জানায়। আমার মেয়েকে আপনারা বাঁচান। এই নির্যাতনের পর থেকে এখন আমাদের বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করে মিমাংসা করার চেষ্টা করছে। এদিকে আয়করের আইনজীবী জহুরুল ইসলাম এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এমন নির্যাতনের বিষয় আমার জানা নেই। যদি এমনটি হয়ে তবে আমি মেয়েটার পক্ষে লড়ব। তায়েবের বাড়িতে গেলে তায়েবকে পাওয়া যায় নি। তায়েবের মা ও বড় বউ নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেন। বলেন সে নিজে নিজেই হাত কাটে ও দেয়ালে মাথায় ঢিপ খায়। কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নাসির উদ্দিন এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি বিষয়টি তদন্ত করছি। দোষী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply