ঘূর্ণিঝড় ফণী আছড়ে পড়ার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে যাতে কোনো ধরনের ত্রুটি না থাকে তা খতিয়ে দেখতে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশটির আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে আগামীকাল শুক্রবার (৩ মে) দুপুর নাগাদ পুরীর দক্ষিণ দিকে উড়িষ্যা উপকূলে এই সিভিয়ার সাইকেলোনিক স্টর্মটি আছড়ে পড়তে পারে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন যাতে তারা প্রতি মুহূর্তের খোঁজখবর রাখেন। তাছাড়া ফণীর গতিবিধির উপর নজর রাখার নির্দেশও দিয়েছেন মোদী। ১৯৯৯ সালে উড়িষ্যায় আছড়ে পড়া সুপার সাইক্লোনের পর থেকে এই ফণী-ই সবচেয়ে ভয়াবহ ঝড় হতে চলেছে বলে অনুমান ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের।
# পুরী, কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক, বালাসোর, ময়ূরভঞ্জ, গঞ্জাম, খুরদা কটক, জাজপুর ইত্যাদি জায়গায় থেকে মানুষকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ভূ-পৃষ্ঠে আছড়ে পড়ার সময় বাতাসে ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘন্টায় ১৭৫ কিমি।
# ঘূর্ণিঝড়ের পর পরিস্থিতি যাতে দ্রুত সামলানো যায় তার জন্য প্রতিরক্ষা বাহিনীকে মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। নৌ বাহিনী থেকে শুরু করে বায়ুসেনা এবং উপকূল রক্ষী বাহিনী তার সঙ্গে এনডিআরএফ এবং ওড়িশার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে জাহাজ থেকে শুরু করে হেলিকপ্টার নিয়ে আসা হয়েছে।
# মানুষকে উদ্ধার করা এবং ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য মোট ২৮টি টিম মোতায়েন করেছে এনডিআরএফ। তার মধ্যে ১৬টি আছে উড়িষ্যায়। আর বাকি ১২টি আছে অন্ধপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে। এর বাইরে আরও ৩০টিরও বেশি দলকে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। প্রয়োজন হলে এই বাহিনীকেও কাজে লাগানো হবে।
# ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড়টি পুরী থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।
# হাওড়া-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমন্ডল এক্সপ্রেস, পাটনা-এরনাকুলাম এক্সপ্রেস, হাওড়া-হায়দ্রাবাদ ইস্ট কোস্ট এক্সপ্রেস, ভুবনেশ্বর-রামেশ্বরম এক্সপ্রেস, নিউদিল্লি-ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস নিউদিল্লী-পুরি নন্দনকানন এক্সপ্রেস এবং নিউ দিল্লি পুরুষোত্তম এক্সপ্রেসেরর মতো বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করেছে ভারতীয় রেল।
# উড়িষ্যার সবগুলো সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য কর্মীদের ছুটি ১৫ মে পর্যন্ত বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবীন পট্টনায়ক সরকার।
# পুরো উড়িষ্যায় ৮৮০টি সাইক্লোন শেল্টার তৈরি করা হয়েছে। মানুষকে বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়ে সেখানেই রাখা হচ্ছে। রাজ্য প্রশাসনের প্রবীণ কর্মকর্তাদের গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
# উড়িষ্যার পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে ফণীর প্রভাব পড়তে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গের দুই মেদিনীপুর, দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং ঝারগ্রামের মত জেলায় ঝড়ের প্রভাব পড়বে। প্রভাব পড়বে কলকাতাতেও।
# অন্ধপ্রদেশের ৩টি জেলা শ্রীকাকুলাম, বিশাখাপট্টম এবং বিজয়নগর প্রভাব ফেলবে ঘূর্ণিঝড় ফণী, এইরমধ্যে উপকূলবর্তীে এই শহরগুলোতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে ।
# উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক নীচু এলাকা থেকে সবাইকে সড়িয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply