নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ফাইজুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষিকার সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার দুপুরে শিক্ষিকার বাড়িতে গোপনে প্রবেশ করে ওই শিক্ষা অফিসার। শিক্ষিকার বাড়িতে শিক্ষা অফিসার নেই দাবি করলেও প্রায় দুই ঘন্টা পরে ওই বাড়ি থেকেই শিক্ষা অফিসার বের হওয়াই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এঘটনার পর ওই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। এঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়াই তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী করেছে ওই শিক্ষা অফিসার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাগাতিপাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ফাইজুল ইসলাম এর সাথে মুরাদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ফারহানা খাতুন এর দীর্ঘদিন থেকে গভীর সম্পর্ক । গত রবিবার দুপুরে শিক্ষিকার পরিবারের বৃদ্ধা নানী ব্যাতিত অন্য সদস্যরা বাড়িতে না থাকার সুযোগে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ওই বাড়িতে প্রবেশ করে। এমন খবর শুনে স্থানীয় কয়েকজন সহ সাংবাদিক ওই বাড়ির সামনে এসে শিক্ষা অফিসারের মটর সাইকেল দেখতে পায়।
স্থানীয়রা ওই বাড়িতে শিক্ষা অফিসার আছে কিনা জানতে চাইলে বাড়িতে শিক্ষা অফিসার নেই এমন দাবি করেন সহকারী শিক্ষিকা ফারহানা খাতুন। বিষয়টি স্থানীয়দের সন্দেহ হলে ওই বাড়ির সামনেই অবস্থান নেন এবং শিক্ষা অফিসারের অবস্থান জানতে একাধিক বার মুঠোফোনে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। ঠিক সেই মুহুত্তে ওই বাড়িতে প্রবেশ করে অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম এবং স্থানীয় আব্দুল বারী। এর কিছুক্ষনের মধ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ফাইজুল ইসলাম। এঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনার পর মুখ খুলতে শুরু করেছে অনেক শিক্ষকবৃন্দ। মুরাদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ওয়াহিদা খানম বলেন, শিক্ষা অফিসার ফাইজুল ইসলাম প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন ওই স্কুল ভিজিটে আসতো। এছাড়াও সহকারী শিক্ষিকা ফারহানা মাঝে মধ্যে বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার এনে দাওয়াত খাওয়াতো। ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা ফারহানা নিয়মিত ক্লাশ নিতোনা বরং তার কথায় চলতো বিদ্যালয়। এব্যাপারে অন্য শিক্ষকেরা প্রতিবাদ করলে শিক্ষা অফিসার এসে তাদের রিমান্ডে নিতেন। আর শিক্ষিকা ফারহানা অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক/কর্মচারীদের বলতেন বেশি বুঝার চেষ্টা করলে সার্ভিস বুকে এমন কিছু লিখিয়ে নিবেন শিক্ষা অফিসারকে দিয়ে যা চিরদিন বয়ে বেড়াতে হবে বলে ভয়ভীতি দেখাতেন।
এব্যাপারে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি বাগাতিপাড়া শাখার সাধারন সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কারনে দুএকটি শিক্ষিকার সংসার ভেঙ্গেছে। এমন বিষয়ে সঠিক তদন্ত দাবী করে। তিনি আরও বলেন তার বদলী সহ বিভাগীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করতে হবে। তাছাড়া অত্র উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক/কর্মচারীদের সাথে নিয়ে কর্মবিরতি করা হবে বলে জানান তিনি।
এ দিকে দৈনিক ভোরের কাগজ এর বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি মিজানুর রহমান, দৈনিক নাটোরের খবর এর বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি রাজিবুল ইসলাম বাবু ও ঢাকা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক নতুন কথা পত্রিকার বাগাতিপাড়া সংবাদদাতা তোসাদ্দেক সরকার তিতাস এর নামে থানায় অভিযোগ দেওয়া ঘটনার তদন্ত দাবী করে তার বদলী সহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রেস ক্লাব সহ বিভিন্ন গনমাধ্যম কর্মীরা।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply