সন্তান জন্মের পর তাকে পরম মমতায় গড়ে তোলেন বাবা-মা। এরপর সেই সন্তান বড় হলে তাকে নিয়ে নানা স্বপ্ন দেখেন তারা। কিন্তু বড় হয়ে কোন সন্তান হয়তো তার পিতা মাতার স্বপ্ন পূরণ করেন, আবার কেউ তাদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেন। এমনই এক পিতার স্বপ্ন ভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুর সদরপুরের দশ হাজার গ্রামে।
সদরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের দশহাজার গ্রামের বাসিন্দা ৮২ বছর বয়সী বৃদ্ধ আব্দুল আজিজ খাঁ’কে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে তার মেয়ে আসমা খাতুন। বৃদ্ধ আজিজ খাঁ বিকলাঙ্গ। তিনি পায়ের উপর ভর করে দাঁড়াতে পারেন না। বসেই খুঁড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। শুধুমাত্র জমির লোভে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন তার মেয়ে আসমা।
বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে এখন আজিজ খাঁর ঠাই হয়েছে ফরিদপুর বাস টার্মিনালে। টার্মিনালের যাত্রী সাধারণের জন্য স্থাপিত টয়লেটের পাশের এক কোনে রাতে থাকেন তিনি। দিনের বেলায় টার্মিনালে ভিক্ষা করেন।
আব্দুল আজিজ খাঁ বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে আমার শরীরে এলার্জি দেখা দেয়। এরপর আস্তে আস্তে শরীর অবস হতে থাকে, একপর্যায়ে আমার পায়ের জোড় হারিয়ে ফেলি। চলাফেরা বন্ধ হয়ে যায়। কোনরকম বসে বসে চলাফেরা করি।
তিনি বলেন, দশ হাজার গ্রামে ৬২ শতাংশ জমির উপর আমার বাড়ি। বাড়ির পাশেই রয়েছে আরো প্রায় দুই একর জমি। মেয়ে আসমার দ্বিতীয় বিয়ের পর তাকে আমি ২৩ শতাংশ জমি দেই বাড়ি করার জন্য, আসমা ওই জায়গায় ঘর তুলে থাকতে শুরু করে। এরপর পুরো বাড়িটিই দখল করে নেয় আসমা ও তার স্বামী রফিক। গত বছর আমাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় আসমা। এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছে গিয়েও আমি বিচার পাইনি। আমাকে যখন বাড়ি থেকে বের করে দেয় আমি বলেছিলাম, আমাকে শুধু দুমুঠো খাবার দিস, জমিতো তোদেরই। কিন্তু তারা আমাকে বোঝা মনে করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে এক ভদ্রলোক আমার কথাগুলো শুনে আমাকে জেলা লিগ্যাল এ্যইড অফিসে যেতে বলে। আমি সেখানে গিয়ে আমার মেয়ে আসমার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছি।
জেলা লিগ্যাল এইড অফিস সূত্রে জানা যায়, বৃদ্ধ আব্দুল আজিজ খাঁ তার মেয়ে আসমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দিয়েছেন, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আসমাকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহে শুনানী অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে বৃদ্ধ আব্দুল আজিজ খাঁ’র মেয়ে আসমার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply