বর্তমানের একান্নবর্তী পরিবার বিলীন হওয়ার যুগে মানুষে মানুষে যোগাযোগের ব্যবধান বাড়ছে। বড় পরিবার ভেঙে ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। পরিবারের ভাঙনের প্রধানতম কারণের একটি বউ-শাশুড়ির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি। যার কবলে পড়ে পাশে থেকেও অপর হয়ে ওঠে একই পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু ভারতের রাজধানী দিল্লিতে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা আপনাকে অন্য গল্প শোনাবে।
বউ ডানে বলেন তো শাশুড়ি বলেন বামে। শাশুড়ির পছন্দ এক, বউয়ের আরেক। শাশুড়ি-বউয়ের মধ্যকার সম্পর্কের কথা বললে এমন সব দৃশ্যই চোখে ভাসে। টিভি সিরিয়ালগুলোতেও এমন দৃশ্যের বর্ণনা পাবেন। কিন্তু দিল্লির পশ্চিম অংশের বাসিন্দা এক শাশুড়ি তার বউকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
গৃহবধূকে একটি কিডনি দান করা ওই নারীর নাম বিমলা, বয়স ৬৫ বছর। পশ্চিম দিল্লির উত্তম নগরের বাসিন্দা তিনি। তার ৩৬ বছর বয়সী গৃহবধূর নাম কবিতা। যার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা কোনো উপায় পাচ্ছিলেন না। তারা বলেন, যদি কবিতাকে কেউ কিডনি দান করে তবেই তাকে বাঁচানো যাবে।
কিডনি হলেই মেয়ে সুস্থ্য হয়ে যাবে শোনার পর কবিতার মা তার নিজের একটা কিডনি মেয়েকে দেবেন বলে কবিতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর এর জন্য সব প্রস্তুতিও প্রায় চূড়ান্ত। কিন্তু আচমকা বেঁকে বসলেন কবিতার মা। মেয়েকে বাঁচাতে তার একটি কিডনি দিতে রাজি হলেন না। কিন্তু এমনটা শোনার পর কবিতার শাশুড়ি বললেন তিনি তার ছেলের বউকে কিডনি দেবেন।
দিল্লির বিএলকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কবিতার কিডনি স্থাপনের জন্য অস্ত্রোপচার করা হয়। সেখানকার নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান সুনীল প্রকাশ জানান, ‘এটা কোনো সিনেমার গল্প নয়, এটা একেবারেই বাস্তব। এমন ঘটনা বাস্তব জীবনে সত্যিই খুব বিরল। কবিতা তার ৬৫ বছর বয়সী শাশুড়ির দেয়া কিডনিতেই নতুন জীবন পেল।’
চিকিৎসক প্রকাশ আরও জানান, সফল অস্ত্রোপচারের পর কবিতা এবং বিমলা দুজনেই এখন সুস্থ আছেন। বিমলা এবং কবিতার এই ঘটনা বউ-শাশুড়ি সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেল বলে মনে করেন তিনি। আর যারা সম্পর্ককে অসম্মান করেন তারাও এর থেকে শিক্ষা নেবেন যে, মানুষের সম্পর্ক যদি হয় ভালোবাসার তাহলে এই পৃথিবী আরও বাসযোগ্য হয়ে উঠবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply