শিশুরা ফুলের মতো পবিত্র, নিষ্পাপ হয়। প্রতিটি শিশু একটা দেবদূতের মতো। প্রতিটা শিশুকে আদর-যত্নে আগলে রাখা আমাদের দায়িত্ব। অথচ দেশে শিশু নির্যাতনের হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই পাশবিক ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখলে অবাক হতে হয়। বিকৃতমনাদের মধ্যে শিক্ষিত অশিক্ষিত ভেদাভেদ নাই।
মসজিদ মাদ্রাসার ইমাম, শিক্ষক, মুয়াজ্জিন- তা সে চল্লিশ বা পঞ্চাশোর্ধ বয়স্ক মানুষ, এমনকি পরিবারের চাচা, দাদা এমনকি বাবাও এসব অপরাধে জড়িত বলে আমরা পত্র পত্রিকায় দেখি। ঘটনাগুলোর উপযুক্ত বিচার হচ্ছেনা এবং দেশজুড়ে সামাজিকভাবে তাদেরকে প্রতিহত করা হচ্ছে না বিধায় অপরাধের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এবারের ঘটনাটি ঝিনাইদহের।
জানা গেছে, জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলায় স্কুলের নিচের ক্লাসের শিশু ছাত্রীদের বিভিন্ন সময় শ্লীলতাহানীর ঘটনায় হরিয়ারঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গোলাম কিবরিয়া (৫৮) নামের এক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়ার হাতিয়া আবদালপুর গ্রাম থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তিনি একই গ্রামের দরগাপাড়ার আব্দুল জব্বারের ছেলে। এ ঘটনায় হরিয়ারঘাট গ্রামের নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে হরিণাকুন্ডু থানায় একটি মামলা করেছেন।
হরিণাকুন্ডু থানার ওসি কে এম শওকত আলী জানান, হরিয়ারঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া ৪র্থ শ্রেণির ৪ শিশু শিক্ষার্থীকে প্রায়শঃ স্কুলের ২য় তলা ভবনের ছাদে নিয়ে যায়। নিয়ে সেখানে তাদের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিত। লম্পট ওই শিক্ষক ওই শিশু ছাত্রীদের ইউনিফর্মের অভ্যন্তরে আপত্তিকর স্থানেও হাত দিত বলে ছাত্রীরা জানায়। ছাত্রীরা এসব করার সময় প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে তাদেরকে মারধরের হুমকি দিত।
স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে ঘটনাটি শনিবার রাতে নির্যাতিত ওই শিক্ষার্থীদের একজন তার অভিভাবকদের জানালে তারা বাকি ছাত্রীদের অভিভাবকদের সাথে কথা বলে ঘটনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন। তারপর অভিভাবকরা হরিণাকুন্ডু থানায় উপস্থিত হয় এবং ওই লম্পট শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযোগ পেয়ে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করে।
এলাকাবাসী জানায়, শিক্ষক গোলাম কিবরিয়াকে ইতিপুর্বে স্কুল কমিটি এমন অভিযোগ পেয়ে ‘৭ বার’ সতর্ক করে নোটিশ দেন। কিন্তু তারপরও তিনি এমন কাজ থেকে বিরত হননি।
শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া দায়ী, শাস্তি তার প্রাপ্য। কিন্তু যে স্কুল কমিটি এমন বিকৃত মানসিকতার শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ‘সাত বার’ একই ভুলের জন্য ক্ষমা করেছে তাদের কী এতে কোনোই দায় নেই? তারা কী পরোক্ষভাবে সেই শিক্ষককের পক্ষে গিয়ে পাল্লা ভারী করে নি? প্রশ্নগুলো থেকে যাবে অন্তরালেই।
Leave a Reply