ফেনীতে আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার চার্জগঠনের শুনানি চলছে। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দোলাসহ চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামিকে আদালতে তোলা হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, গত ১০ জুন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ চার্জ গঠনের তারিখ নির্ধারণ করেন। ওইদিন মামলার বাদী রাফির ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট সম্পর্কে অনাপত্তিসূচক মতামত দেন। এরপর আদালত চার্জশিট আমলে নিয়ে মামলার কার্যক্রম শুরু করেন। এসময় আদালত মামলায় গ্রেপ্তার ২১ আসামির মধ্যে চার্জশিট বহির্ভূত সহপাঠি আরিফুল ইসলাম, নুর হোসেন, কেফায়েত উল্যাহ, মো. আলাউদ্দিন ও শহিদুল ইসলামকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। অপর ১৬ আসামির মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা মো. রুহুল আমিন, কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, প্রভাষক আফছার উদ্দিন, মাদ্রাসা ছাত্র ইফতেখার উদ্দিন রানা, মো. শামীম, নুর উদ্দিনসহ ৬ আসামির জামিনের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করা হয়।
মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদদৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন, হেফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ আব্দুল কাদের, প্রভাষক আফছার উদ্দিন, মাদরাসা ছাত্রী কামরুন নাহার মণি, উম্মে সুলতানা পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা/শম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন মামুন, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদের সদ্য বিলুপ্ত সহ-সভাপতি রুহুল আমিন, মহিউদ্দিন শাকিল ও মোহাম্মদ শামীম।
এর আগে গত ২৮ মে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে ৮০৮ পৃষ্ঠাসংবলিত নথি ও চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর গত ৩০ মে মামলার ধার্য তারিখে আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে আদালত শুনানি না করে ওই মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে পাঠানোর আদেশ দিয়ে ১০ জুন মামলার শুনানির দিন ধার্য করেন।
প্রসঙ্গত, সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান ওরফে রাফিকে গত ৬ এপ্রিল গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় রাফির ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামি করে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ ও পিবিআই এ মামলায় ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে ১২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর আগে গত ২৭ মার্চ নিজ কক্ষে ডেকে রাফিকে শ্লীলতাহানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা। এ ঘটনায় তার মা শিরীন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করলে পুলিশ সিরাজ উদদৌলাকে গ্রেপ্তার করে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply