কুমিল্লায় পাওনা টাকা চাওয়ার জেরে পাঁচ পরিবারের অন্তত ১৫টি বসত ঘরে হামলা, ভাঙচুর এবং নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ কর্মী শাহিন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী ওই সব পরিবারের অভিযোগ, হামলাকারীরা বসতঘরের তালা ভেঙে আসবাবপত্র, স্বর্ণালংকার, টাকা-পয়সা লুটসহ দুটি মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। উল্টো ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
হামলা থেকে রক্ষা পেতে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা একাধিকবার পুলিশের ৯৯৯ এ কল দিলেও সাড়া মেলেনি। সন্ত্রাসীরা রাতভর তাণ্ডব চালিয়ে গেছেন।
শুক্রবার রাতে কুমিল্লার সদর উপজেলার কালিরবাজার ইউনিয়নের ধনুয়াখলা গ্রামের মাদ্রাসা বাড়িতে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ, আলম ও সেলিম শাহিনের কাছে পাওনা টাকা ফেরতের দাবি করে। দিবে বলে শাহিন দুই বছর যাবত ঘুরিয়ে আসছে। চলতি মাসের ১ তারিখে দেনাদার শাহিন জানায় স্থানীয় সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে টাকা ফেরত দেবে।
স্থানীয়রা জানায়, ধনুয়াখলা গ্রামের মাঈন উদ্দিন আলম বেঙ্গল ফিস এ- ফিড এবং গ্লোব এগ্রো প্রেডাক্টসের স্থানীয় ডিলার। একই গ্রামের যুবলীগ কর্মী শাহীন তার মাছের ফিশারির জন্য প্রায় ১৫ লাখ টাকার মাছের খাদ্য বাকি নিয়েছিলেন আলম থেকে। এই নিয়ে আলমের সাথে শাহিনের লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। বিষয়টি নিরসনে শুক্রবার সন্ধ্যায় দুই পক্ষের মধ্যে সালিশ বৈঠক বসার কথা ছিল। সালিশি বৈঠকের পূর্বে সন্ধ্যায় শাহিন তার লোকজন নিয়ে আলমের বাড়িতে যায়। ওই খানে কথা কাটাকাটির সূত্র ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে শফিউল্লাহ, নোমান, জয়নাল ও বাবুল মিয়া নামে চারজন আহত হয়। এই ঘটনার জের ধরে পরে সাড়ে ১১টায় যুবলীগ কর্মী শাহিনের নেতৃত্বে ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী মাইনুদ্দিন সেলিম ও আলমের বাড়িতে হামলা ও তাণ্ডব চালায়। এসময় একই বাড়ির মিজান, মকবুল আহমেদ, বারেকের বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
মাঈন উদ্দিন আলমের স্ত্রী জাহানারা বেগম জানান, শাহিনসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা আমাদের বাড়িতে এসে হামলা ও ভাঙচুরের শুরু করলে সহযোগিতা চেয়ে পুলিশের ৯৯৯ এ বেশ কয়েকবার কল দিয়েও রক্ষা পাইনি। পুলিশ আমাদের উত্তর দিয়েছেন অভিযোগ সঠিক না হলে উল্টো আপনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ আমলে নেয়ার আগেই সন্ত্রাসীরা আমাদের বসত ঘরের তালা ভেঙে প্রবেশ করে নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ আমাদের মারধর এবং টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকারসহ ঘরের মালামাল লুট করে।
আরেক ভুক্তভোগী সালমা আক্তার জানান, হামলা ও ভাঙচুরের এক পর্যায়ে পুলিশ আসলেও তাদের উপস্থিতেও সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা হামলা ভাঙচুর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
কুমিল্লা ক্যান্টেনমেন্ট পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মাহবুব বলেন,ভুক্তভোগী পরিবারের উপর হামলা ও বসতঘর ভাঙচুর ঘটনা শুনে আমরা ঘটনাস্থলে রাতেই গিয়েছি। হামলাকারীদের আমরা চিনতে পেরেছি। ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলেই আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply