ধর্ষণ থেকে বাঁচতে গিয়ে ‘গণপিটুনি’র শিকার তরুণী!
ধর্ষণ থেকে বাঁচতে এলাকা দিয়ে পালাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় একটি ছেলেকে দেখে তার সাহায্য পেতে ডাক দেন। এমন দাবি করেছেন ‘গণপিটুনি’র শিকার রোকেয়া বেগম (১৮) নামের ওই রোহিঙ্গা তরুণী। গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। শুক্রবার সকালে বান্দরবানের বালাঘাটার লেমুঝিরি আগা পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটককৃত মহিলা কক্সবাজার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শরনার্থী বলে জানা যায়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার ১১টার সময় লেমুঝিরি আগা পাড়া এলাকায় শুভ নামে এক ছেলে গরু চড়াতে মাঠে গেলে অপরিচিত এক মহিলা তাকে কাছে ডাকে। অপরিচিত মহিলা ডাকায় ছেলেটি গিয়ে তার পরিবারের লোকদের বিষয়টি বললে স্থানীয় লোকজন গিয়ে ঐ মহিলাকে ধাওয়া করলে সে পালিয়ে যাওয়া সময় এলাকাবাসী তাকে ধরে মারধর করে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মহিলাটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জল তঞ্চঙ্গ্যা বলেন মহিলাটি কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্প থেকে এসেছে বলে জানায়। তার সাথে আরো ৪ জন সঙ্গী রয়েছে বলেও এলাকাবাসীর কাছে স্বীকার করে মহিলাটি।
তবে মহিলার চিৎকার শুনে তার সাথীরা পালিয়ে যায়। এদিকে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি জানায় মাথার চিকিৎসা করানোর জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে যাবার কথা বলে সে কুতুপালং ক্যাম্প থেকে বের হয়।
এদিকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোকেয়া বলেন, তিনি ছেলেধরা নন। উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে থাকেন। তিনি বিবাহিত। স্বামীর নাম হামিদ উল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, শরণার্থী শিবির থেকে তার বাবার সঙ্গে চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন। শুক্রবার সকালে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বের হলে তিন যুবক তাকে ট্যাক্সিতে তুলে সরাসরি বান্দরবানে নিয়ে আসেন। এরপর ওই পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে তারা তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় পালানোর চেষ্টা করার সময় পথে ওই কিশোরের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি কিশোরের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। কিশোর ভুল বুঝে চিৎকার দিলে এলাকাবাসী এসে তাকে পিটুনি দেন।
‘গণপিটুনি’র শিকার ওই তরুণী বলেন, যে তিন তরুণ তাকে চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবানে নিয়ে আসেন তিনি তাদের নাম জানতে পেরেছেন। তবে তাদের বাড়ি কোথায় তা জানাতে পারেননি। রোকেয়ার ভাষ্য মতে, ওই তিন তরুণের নাম রহমত উল্লাহ, আয়াত উল্লাহ ও জাবেদ।
বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, বালাঘাটার লেমুঝিড়ি আগা পাড়া এলাকায় ছেলে ধরা সন্দেহে এক মহিলাকে আটক করেছে এলাকাবাসী। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সুস্থ্য হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply