আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। চার ঘণ্টা শুনানি শেষে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বেলা ৩টা ৫ মিনিটে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে গত ২৩ জুলাই আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির পক্ষে জামিনের আবেদন করেন তার পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী মাহাবুবুল বারী আসলাম। ওইদিন জামিনের আবেদন গ্রহণ করে ৩০ জুলাই শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটে মিন্নির জামিনের শুনানি শুরু হয়। মিন্নির পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী মাহাবুবুল বারী আসলাম, অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা কাদের, ঢাকা থেকে আসা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ, অ্যাডভোকেট নীনা গোস্বামী, ব্লাস্টের শাহিদা তালুকদার, এ জেড এম শহিদুজ্জামান খান, রাকিব হাসান, সাগর সরকার, নুসরাত হত্যা মামলার আলোচিত আইনজীবী ফারুক আহম্মেদসহ ৩০ জন আইনজীবী শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন।
বাদীপক্ষে বরগুনার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ভুবন চন্দ্র হাওলাদারসহ ৩০ জন আইনজীবী কথা বলেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বেলা ১টার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবিরকে আদালতে তলব করা হয়। তিনি আদালতে আসার পরে ২টা ৫ মিনিটে পুনরায় শুনানি শুরু হয়। এক ঘণ্টা শুনানি এবং উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি খণ্ডন শেষে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।
আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির পক্ষের আইনজীবী মাহাবুবুল বারী আসলাম জানিয়েছেন, তারা উচ্চ আদালতে পরবর্তীতে মিন্নির জামিনের জন্য আবেদন করবেন।
আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গত ১৬ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়। ওইদিন রাত ৯টার দিকে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে বরগুনা কারাগারে পাঠানো হয়। পরের দিন বিকেল সোয়া তিনটার দিকে কারাগার থেকে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ডে নিয়ে ৪৮ ঘণ্টা পরই ১৯ জুলাই বেলা ২টার দিকে মিন্নিকে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়া হয়। ওইদিন রাত সাড়ে ৭টার দিকে মিন্নিকে বরগুনা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সেই থেকে মিন্নি বরগুনা কারাগারে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন সকালে প্রকাশ্যে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত মিন্নিসহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা সবাই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। তবে মামলার এজাহারভুক্ত ১২ আসামির মধ্যে এখনো চারজন গ্রেফতার হয়নি। তারা হচ্ছে মুসা, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রায়হান ও রিফাত হাওলাদার। বুধবার (৩১ জুলাই) গ্রেফতারকৃত আসামিদের বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply