বাসচাপায় রাজধানীর কুর্মিটোলায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিবের মৃত্যুর ঘটনার মামলার রায় রোববার।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ গত ১৪ নভেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি।
এ দুর্ঘটনার জন্য বেপরোয়া বাসের ড্রাইভারকে দায়ী করে দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছেলে মেয়েগুলোদের ইচ্ছাকৃতভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। অদক্ষ ড্রাইভাররা অসুস্থ প্রতিযোগিতা করে ওদেরকে মেরে ফেলেছে। ওদের সর্বোচ্চ সাজা হওয়া উচিত।
২০১৮ সালের ২৯ জুলাই জাবালে নূর পরিবহনের দুইটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের ঢালে রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থীর ওপর তুলে দেয়। এতে ৯ জন ছাত্রছাত্রী গুরুতর আহত হয়। আহতদের মধ্যে রমিজউদ্দিন কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬) ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজিব (১৭) বাসের নিচে পিষ্ট হয়ে মারা যায়।
ঘটনার রাতেই নিহত দিয়ার বাবা দূরপাল্লার বাস চালক জাহাঙ্গীর আলম ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এক সপ্তাহ পর সরকারের আশ্বাসে ঢাকার সড়ক শান্ত হয়।
২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিটে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ২৭৯, ৩২৩, ৩২৫, ৩০৪ ও ৩৪ ধারায় দাখিল করা হয়। ৩০৪ ধারা অনুযায়ী, খুন বলে গণ্য নয়, এরূপ নরহত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এরপর ২৫ অক্টোবর আদালত আসামিদের অভিযোগ গঠন করেন।
এ মামলার মোট আসামি ছয়জন। এদের মধ্যে ঘাতক বাস জাবালে নূর পরিবহনের মালিক জাহাঙ্গীর আলম, দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং তাদের সহকারী এনায়েত হোসেন কারাগারে। জাবালে নূর পরিবহনের আরেক মালিক শাহাদাত হোসেন জামিনে রয়েছেন। তার পক্ষে মামলা উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। চালকের সহকারী কাজী আসাদ এখনও পলাতক। এ মামলায় ৪১ সাক্ষীর মধ্যে ৩৭ জন সাক্ষ্য দেন।
Leave a Reply