জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দূর্নীতি মামলার রায়ে দন্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে আজ। বিচারপতি এনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি সহিদুলের করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ বিষয়ে আদেশ দিবেন।
খালেদা জিয়ার জামিনের সিদ্ধান্তের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কার্যতালিকার এক নম্বরে রাখা হয়েছে। এই মামলায় খালেদা জিয়া পাঁচ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হয়ে ১ মাস যাবত জেলে রয়েছেন। আজ উচ্চ আদালত থেকে খালেদা জিয়া জামিন দিবেন কিনা এবং তিনি কারামুক্ত হতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা অধীর আগ্রহে চেয়ে আছেন আদালতের আদেশের দিকে।
হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে নথি আসার সময়সীমা শেষ হয়েছে বিষয়টি খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতের নজরে আনেন গত বৃহস্পতিবার। পরে আদালত জামিন বিষয়ে আদেশের জন্য রোববার (আজ) দিন ধার্য করেন। এরপর থেকেই সবার অপেক্ষা বাড়ছে। বিচারপতিরা কী আদেশ দেবেন তা জানতে দলের নেতাকর্মীসহ অনেক মানুষ উন্মুখ হয়ে আছেন।
জামিনের বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেছেন,এ মামলায় জামিন হবে বলে তারা আশাবাদী। দুদকের মামলায় ৫-১০ বছরের সাজা হলেও আসামির জামিনের নজির আছে। অন্য কোনো মামলায় যদি নতুন করে গ্রেফতার দেখানো না হয় তবে জামিন পেলে খালেদা জিয়ার কারা মুক্তিতে বাধা নেই বলেও তারা জানান।
অন্যদিকে দুদক পক্ষের আইনজীবীরা বলেন,খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আদালত কী আদেশ দেন তা কালই (আজ) জানা যাবে। নথি আসার সময় এখনও শেষ হয়নি বলে জানান তিনি। তিনি বলেন শুক্র ও শনিবার কার্যদিবসের হিসাব থেকে বাদ দেয়া হলে ১৫ দিন শেষ হবে আগামী বৃহস্পতিবার। আর যদি শুক্র ও শনিবার ধরে হিসাব করা হয় তবে মেয়াদ শেষ হবে কাল (আজ)।
আদালত সূত্র হতে জানা গেছে,মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানোর আদেশ গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতে পৌঁছেছে। সে মোতাবেক ১৫ দিন শেষ হবে আজ। এ প্রসঙ্গে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর পেশকার মোকাররম হোসেন সংবাদ মাধ্যম কে বলেন, বিচারিক নথি আগামী রোববার (আজ) হাইকোর্টে পাঠানো হচ্ছে। নথি প্রস্তুতের আনুষঙ্গিক কাজগুলো করা হচ্ছে। রোববার এ মামলার নথি উচ্চ আদালতে পাঠানো হবে।
জামিনের বিষয়ে খালেদা জিয়ার প্যানেল আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা শুনেছি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অন্য কোনো মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখাবেন না। আমরাও আশা করছি তাই।’ তিনি আরো বলেন, দুদক যেহেতু সাজা বৃদ্ধির কোনো আবেদন করেনি সেহেতু আমরা আশা করছি খালেদা জিয়ার জামিন হলে তারা (দুদক) আপিলে যাবে না। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া জামিন পাওয়ার যোগ্য।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. আক্তারুজ্জামানের আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই আদালত খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয় আসামির সবাইকে মোট ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। এ অর্থ দণ্ডের টাকা প্রত্যেককে সমান অঙ্কে প্রদান করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। রায়ের পর থেকে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। বিচারিক আদালতের দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পাওয়ার পর ৩২টি যুক্তি দেখিয়ে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন দেয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, আবেদনকারীর বয়স ৭৩ বছর। তিনি শারীরিকভাবে বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। তিনি ৩০ বছর ধরে গেঁটেবাত, ২০ বছর ধরে ডায়াবেটিস, ১০ বছর ধরে উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে আয়রন ঘাটতিতে ভুগছেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply