গতকাল নেপালের কাঠমুন্ডু তে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ার লাইন্সের বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটির প্রধান পাইলট আবিদ সুলতান মারা গেছেন। আ মঙ্গলবার ভোর রাতে কাঠমুন্ডুর নরভিক হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। নিহতের পরিবারকে মৃত্যুর খবর ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন ইউএস-বাংলার কর্মকর্তাগণ।
ইউএস-বাংলার এয়ারলাইন্সে ২ জন পাইলট ও দুইজন ক্রু ছিলেন।চার জনের মধ্যে এখন শুধুমাত্র ক্রু কে এইচ এম শাফি বেঁচে আছেন। বিমান দূর্ঘটনার পর পর মারা যান কো -পাইলট প্রিথুলা রশিদ ও ক্রু খাজা হোসেন। আজ প্রধান পাইলট আবিদ সুলতানও মারা গেলেন। মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলো আরো এক লাশ।
সোমবার দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউএস-বাংলার বোম্বার্ডিয়ার ড্যাশ ৮ কিউ৪০০ মডেলের এস২-এজিইউ বিমানে ৭১ জন আরোহী নিয়ে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে রওনা করেন পাইলট আবিদ।
কাঠমুন্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণ করার সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে যায় বিমান টি এবং আগুনে ভষ্মীভূত হয়ে যায় সমস্ত বিমান। তিনি সহ নিহতের সংখ্যা ৫০ জন।
নেপালের স্থানীয় এক সংবাদ মাধ্যমের সংগ্রহ করা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) ও প্রধান পাইলট আবিদ সুলতানের সর্বশেষ কথোপকথন থেকে জানা যায় এটিসি থেকে অবতরণের জন্য ভুল নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
কন্ট্রোলরুমের সঙ্গে তার সর্বশেষ কথোপকথনের অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, কন্ট্রোলরুম থেকে বিমানের পাইলটকে বিমানবন্দরের ডানদিকের দুই নাম্বার রানওয়েতে অবতরণের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। পরে আবিদ বলেন, ঠিক আছে স্যার।
এটিসির নির্দেশনা অনুযায়ী, তিনি বিমানটি বিমানবন্দরের ডানদিকে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান কন্ট্রোলরুমে। কিন্তু ডানদিকে রানওয়ে ফ্রি না থাকায় তিনি আবারও কন্ট্রোলরুমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় তাকে ভিন্ন বার্তা দেয়া হয়। এবারে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি বর্তমান অবস্থানে থাকতে পারবেন? এ সময় পাইলট আবিদ দুই নাম্বার রানওয়ে ফ্রি করার জন্য কন্ট্রোলরুমের কাছে অনুরোধ জানান। কিন্তু তাকে আবারও ভিন্ন বার্তা দেয়া হয়।
এর কিছুক্ষণ পর পাইলট আবিদ বলেন, স্যার আমি আবারও অনুরোধ করছি রানওয়ে ফ্রি করুন। এর পর পরই বিমানটি বিকট শব্দ করতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পর স্থানীয় সময় সোমবার বেলা ২টা ১৮ মিনিটে বিমানটি ত্রিভুবন বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে আছড়ে পড়ে।
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ৭১ আরোহীর মধ্যে পাইলট আবিদসহ ৫০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২৫ বাংলাদেশি যাত্রী।
উল্লেখ্য, ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র আবিদ বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ছিলেন। তিনি বিমানবাহিনীর মিগ-২১ চালানোর অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ ছিলেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply