লেবু আর তেঁতুল দুটোই স্বাদে টক। কিন্তু তেঁতুলের চেয়ে লেবুর গুণ অনেক বেশি। এই ভাবে একটি লোককথা প্রচলিত আছে হিন্দি ভাষায়- তেঁতুলে আছে একটি গুণ কিন্তু অপকারিতা কুড়িটি, লেবুর কোনো অপকারিতা নেই কিন্তু গুণ আছে কুড়িটি।
লেবুর রস খেতে রুচিকর এবং খাবার হজম করায় তাড়াতাড়ি। তরকারি ডাল প্রভৃতিতে লেবুর রস মেশানো হয় কিছুটা স্বাদ বাড়াবার জন্যে কিছুটা বা খাবার যাতে তাড়াতাড়ি হজম হয় সেই জন্যে।
টক লেবুর মধ্যে কাগজি বা পাতিলেবুর উপকারিতাই বেশি। পাতিলেবু বা কাগজি লেবু ছাড়াও বাজারে নানা রকমের লেবু পাওয়া যায়-গোঁড়া লেবু বা টক জামির গন্ধরাজ লেবু, বাতাবি লেবু, কমলা লেবু, মৌসম্বি ইত্যাদি।
আয়ুর্বেদ মতে :
পাতি বা কাগজি লেবু গুল্ম(পেটের ভেতরের বায়ু গোলক বা টিউমার), কাশি, কফ, বমি, তৃষ্ণা, কো্ষ্ঠবদ্ধতা, অম্লপিত্ত, পেটের গ্যাস বা শোথ জাতীয় পীড়া নাশ করে। খিদে বাড়ায়, চোখের পক্ষে উপকারী, খাবার তাড়াতাড়ি হজম করিয়ে দেয়, রুচি বৃদ্ধি করে। বাত, অম্ল(অম্বল)ও পেটের অসুখের উপকার দেয়। কৃমি নাশ করে। শূল ব্যথা দূর করে। বিষের দোষ নাশ করে। শরীরের ক্ষয় রোধ করে। ত্রিদোষ অর্থাৎ বাত, কফ ও পিত্তের দোষ দূর করে। বমিও বমি ভাব সারিয়ে তোলে কিন্তু একটু পিত্ত বৃদ্ধি করবার প্রবণতা আছে।
১। পাতিলেবুর রস ফোঁটা ফোঁটা করে কানে দিলে কানের ব্যথা সারে।
২। পাতিলেবুর রসে একটু ভাল ঘি ও নুন মিশিয়ে মুখে রাখলে জ্বরের জন্যে মুখে যে অরুচি সৃষ্টি হয় তা সারে।
৩। সাকল বেলা খাওয়ার আগে খালিপেটে একটা পাতিলেবুর রস গরম জলে মিশিয়ে খেলে লিভারের দোষ ও পিত্তের দোষ সারে-স্বাস্থ্য ভাল থাকে।
৪। পাতিলেবুর রসে অল্প চিনি মিশিয়ে কুলকুচি করলে গলার ব্যথা সারে-স্বরভঙ্গ বা গলার আওয়াজ বসে গেলেও উপকার পাওয়া যায়।
৫। এক পেয়ালা কড়া র চায়ে একটা পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খেলে মাথা ধরা সারে ও মন চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
৬। গেঁটে বাত রোগে পাতিলেবুর রস মালিশ করলে বা পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
৭। ডিপথিরিয়া রোগে বা মুখে ঘা হলে যবক্ষর ও মধু মিশিয়ে লেবুর রসে দিয়ে মুখ ধয়ে ফেললে অনেক সময় উপকার হয়।
৮। পাতিলেবুর রস মহুমূত্র রোগে উপকারী।
৯। স্কার্ভি ও অস্থিসংক্রান্ত রোগে টাটকা লেবুর রসই মহৌষধ।
১০। কয়েক ফোঁটা পাতিলেবুর রস জলে মিশিয়ে পান করলে চোখের জ্যোতি বাড়ে।
১১। শীতকালে হাত-পা জ্বালা করলে বা ত্বক বা চামড়া ফেটে গেলে গ্লিসারিনের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে মাখলে উপকার পাওয়া যায়।
১২। ক্ষত স্থানে লেবুর রস লাগালে ক্ষত ভাল হয়ে যায়।
১৩। লেবুর রস খেলে ক্ষুধা বৃদ্ধি হয় ও রক্ত পরিষ্কার হয়।
১৪। পাতিলেবুর রস জ্বরের দাহ বা জ্বালা সারিয়ে দেয়-তৃষ্ণা দূর করে।
১৫। লেবুর রস রোগে জীবাণুর সংক্রমণ রোধ করে।
১৬। প্রসবের পর বেশি রক্তস্রাব হলে লেবুর রস খেলে উপকার পাওয়া যায়।
১৭। চুলকুনিতে, গায়ে সূর্যে বেশি তাপ লেগে গেলে যে কষ্ট হয় তাতে লেবুর রস বিশেষ উপকারী।
১৮। বিছে বা বিষাক্ত পোকা ঘে জায়গায় কামড়েছে লেবু ঘষলে সেই জায়গায় জ্বালা কমে যায়।
১৯। শরীরে কোনো জায়গা কেটে গেলে এক টুকরো কাপড় লেবুর রস ভিজিয়ে সেখানে জড়িয়ে রাখলে রক্তপড়া বন্ধ হয়।
২০। লেবু টক হলেও অম্লজনক নয়। অল্প পরিমাণে লেবুর রস খেলে অম্লত্ব নষ্ট হয়ে যায় এবং ক্ষারগুণ বৃদ্ধি পায়।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply