ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা- এই কথা তো প্রচলিতই। ফুটবল-কুস্তিতে যেমন গায়ের গায়ে ধস্তাধস্তি হয়, ক্রিকেটে নেই এসবের কিছুই। তবু কখনো কিছু অনৈতিক ঘটনা নাড়া দেয়, আলোড়িত করে ক্রিকেট বিশ্বকে।
অস্ট্রেলিয়া এমনই এক ভুলের পথে হাঁটল। বিনিময়ে মাশুল দিতে হচ্ছে পুরো ক্রিকেট দল, সর্বপরি অস্ট্রেলিয়াকেই- বিষয়টি যে ভীষণ লজ্জারও বটে।
গতকাল কেপটাউন টেস্টের তৃতীয় দিন ক্যামেরায় ধরা পড়ে, ক্যামেরন ব্যানক্রফট বল টেম্পারিং করছেন। এর একটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়লে সারা ক্রিকেট বিশ্বে শোরগোল পড়ে যায়। বিষয়টি অস্ট্রেলিয়া সরকার পর্যন্ত গড়ায়।
বল টেম্পারিং কাণ্ডে তীব্র বিতর্কের মুখে অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের পদ ছেড়ে দিলেন স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে এই খবর। সংবাদ সম্মেলনে পুরো অপরাধ স্বীকার করে নেন স্মিথ। জানান, টেস্ট জিততে মরিয়া হয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে তাঁর দল। ভবিষ্যতে তাঁর নেতৃত্বে এমনটা আর হবে না বলেও আশ্বস্ত করেন স্মিথ। তবে ওই ঘটনার রেশ থাকতে থাকতেই নেতৃত্বই ছেড়ে দিতে হলো এই ব্যাটসম্যানকে। পদ ছাড়তে হলো তাঁর ডেপুটি ওয়ার্নারকেও।
বল টেম্পারিংয়ের দায়ে কোনো টেস্ট অধিনায়ককে সরে যেতে বাধ্য করা এমনিতেই বড় ঘটনা। আর একটি টেস্ট চলার মাঝপথেই অধিনায়কের পদ ছেড়ে দেওয়া তো আরও বিরল। চলতি টেস্টের চতুর্থ দিন থেকে অস্ট্রেলিয়া দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন টিম পাইন। টেস্টের শেষ দুই দিনের নেতৃত্ব থাকবে এই উইকেটরক্ষকের কাঁধে। সিরিজ শেষে সিএ ভবিষ্যৎ অধিনায়ক ঠিক করবে।
এই শোরগোলের মধ্যেই এগিয়ে চলছে খেলা। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে এরই মধ্যে লিডের আকারটি ৩১৮ রানে নিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪ টেস্টের সিরিজে ১-১ সমতা। এই টেস্ট জিতলে ২-১-এ এগিয়ে যাবে স্বাগতিকেরা। কাল স্মিথ স্বীকার করেছেন, অবস্থা বেগতিক দেখে মরিয়া হয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। যদিও গতকাল পর্যন্ত তাঁর কথায় মনে হচ্ছিল, নেতৃত্ব চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক এই ২৮ বছর বয়সী। কিন্তু চাপের মুখে আজ সরে যেতেই হলো।
সিএর প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড বলেছেন, ‘স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে আলোচনা পর ওরা এই টেস্টের বাকি সময়ের জন্য অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের নিজ নিজ পদ ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে।’
সিএ চেয়ারম্যান ডেভিড পিভার জানিয়েছেন, জরুরি বোর্ড সভার পর ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া পাইনকে অন্তর্বর্তী অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিএর নৈতিকতাসংক্রান্ত বিভাগের প্রধান ইয়ান রয় ও দলের টিম পারফরম্যান্স ম্যানেজার প্যাট হাওয়ার্ড এরই মধ্যে কেপটাউনে উড়ে আসছেন। ঘটনা এখানেই যে শেষ হয়ে যাচ্ছে না, তা পরিষ্কার।
তবে খেলার মাঝে এমন অনৈতিকতা বর্জন করা ক্রিকেট খেলুড়ে প্রতিটি দেশের জন্যে মঙ্গলজনক।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply