অবশেষে রাশিয়া থামলো। স্বাগতিক দেশটি ফুটবল বিশ্বকাপে যেভাবে উড়ছিলো, অনেকে হয়তো শংকায় পড়ে গিয়েছিলেন, বিশ্বকাপ কী তবে রাশিয়াতেই থাকবে? এক চুলও নড়বে না?
সেই পথেই হাটছিলো রাশিয়া। তবে শেষমেশ ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে বিদায় নিতে হলো তাদের। স্বাগতিকদের টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেল ক্রোয়াটরা।
কিন্তু হারলেও দলের অর্জনে রুশদের পাশাপাশি গর্বিত দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও প্রধানমন্ত্রী দিমিক্রি মেদভেদেভ।
শনিবার (৭ জুলাই) ম্যাচটা মাঠে বসেই দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ। শক্তিশালী ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সমানে সমান লড়াই করায় ভীষণ খুশি রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেদভেদেব। ম্যাচ শেষেই নিজ দেশের খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানাতে তিনি ছুটে যান রাশিয়ার ড্রেসিংরুমে। সশরীরে গিয়েই রাশিয়ার কোচ স্তানিসলাভ চেরশেসভ ও খেলোয়াড়দের ধন্যবাদ জানান তিনি।
শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও কোচ এবং খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানিয়েছেন টেলিফোনে। এদিন ম্যাচের আগে-পরে কোচ স্তানিসলাভ চেরশেসভকে দু’বার টেলিফোন করেছেন পুতিন।
ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে কোচ চেরশেসভ নিজেই জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন জানানোর কথা, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী ড্রেসিংরুমেই এসেছিলেন। আর প্রেসিডেন্ট পুতিন দিনে (ম্যাচের আগে) ফোন করেছেন। আবার রাতেও ফোন করেছেন। দারুণ একটা ম্যাচ খেলার জন্য তিনি আমাদের সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, শনিবারের ম্যাচে সোচিতে নাটকীয়তা, রোমাঞ্চ- সবকিছুই ছিল। রাশিয়ার স্বপ্ন থামিয়ে বিশ্বকাপের শেষ চারে ক্রোয়েশিয়া। টাইব্রেকারে রাশিয়াকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে সেমি ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া। সেমিতে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়া।
জয়ের মধ্য দিয়ে ১৯৯৮ সালের পর সেকেন্ড সেমি ফাইনালের টিকিট পেল ক্রোয়েশিয়া।
প্রথমে ম্যাচের ৩১ মিনিটে চেরিশেভের দূরপাল্লার দুরন্ত গোলে এগিয়ে যায় আয়োজক রাশিয়া। সমতা ফেরাতে বেশি সময় নেয়নি ক্রোটরা। ৩৯ মিনিটে বাঁ দিক থেকে মারিও মানজুকিচের দারুণ ক্রসে হেডে বল জালে জড়ান ক্রামারিচ। ফলে ম্যাচে ১-১ গোলের সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। এর পর বিরতিতে যায় দু’দল।
বিরতি থেকে ফিরে আক্রমণে জোর বাড়ায় ক্রোয়েশিয়া। রক্ষণাত্মক খেলে পাল্টা আক্রমণে জোর দেয় রাশিয়াও। তাতে অবশ্য স্কোরলাইনে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এরইমধ্যে ৯০ মিনিটের খেলা শেষ। এরপর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ১০০ মিনিটে ভিদার গোলে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে গোল করে ১১৫ মিনিটে সমতা ফেরান ফের্নান্দেস। তখন স্কোরলাইন ২-২ এর সমতা। ফলে ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে যায় রাশিয়া। এরপর টাইব্রেকারে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়। অবশেষে টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৪-৩ গোলে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয় রাশিয়াকে।
বিদায় নিতে হলেও এবার অঘটনের বিশ্বকাপে রাশিয়া তাদের শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। সেই সঙ্গে ফুটবল বিশ্বকে যেন হুমকি দিচ্ছে, সামনের কাতার বিশ্বকাপে তারা যেকোনো দলের বিপক্ষে হয়ে উঠতে পারে বড় প্রতিপক্ষ।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply