কয়েকদিন আগেই নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে ফেসবুক লাইভে এসে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে অভিনেত্রী-মডেল কাজী নওশাবা আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়। আরও দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত।
গত ৪ আগস্ট কাজী নওশাবা নিজের ফেসবুক থেকে অত্যন্ত আবেগী কণ্ঠে লাইভ ভিডিও সম্প্রচার করে বলেন যে, আমি কাজী নওশাবা আহমেদ, আপনাদের জানাতে চাই। একটু আগে ঝিগাতলায় আমাদেরই ছোট ভাইদের একজনের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে এবং দুইজনকে মেরে ফেলা হয়েছে।
আপনারা সবাই একসাথে হোন প্লিজ। ওদেরকে প্রোটেকশন দেন, বাচ্চাগুলো আনসেভ অবস্থায় আছে, প্লিজ। আপনারা রাস্তায় নামেন, প্লিজ রাস্তায় নামেন, প্লিজ রাস্তায় নামেন এবং ওদেরকে প্রোটেকশন দেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার প্রোটেকশন দিতে না পারলে আপনারা মা-বাবা, ভাই-বোন হয়ে বাচ্চাগুলোকে প্রোটেকশন দেন, এটা আমার রিক্যুয়েস্ট।
এ দেশের মানুষ-নাগরিক হিসেবে আপনাদের কাছে রিক্যুয়েস্ট করছি যে, ঝিগাতলায় একটি স্কুলে একটি ছাত্রের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে এবং দুইজনকে মেরে ফেলা হয়েছে এবং ওদের অ্যাটাক করা হয়েছে। ছাত্রলীগের ছেলেরা সেটা করেছে। প্লিজ ওদের বাঁচান প্লিজ। তারা ঝিগাতলায় আছে।
এরপর এই ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি কোথাও। বরং উল্টো তার এ আহ্বান মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়। এতে জনমনে আতঙ্ক ও বিদ্বেষ ছড়ে পড়ে। বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা তার এই মিথ্যা প্রোপাগান্ডার উৎস জানতে ফোন করলে তিনি তার স্বপক্ষে সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেন নি। ওই সময় জিগাতলায় এ ধরনের কোনো ঘটনাও ঘটেনি।
এরপরই এই প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। প্রথম দফায় চার দিনের রিমান্ডে শেষে শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করে আরও ১০ দিন রিমান্ড চাইলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
ঢাকা মহানগর হাকিম আমিরুল হায়দার চৌধুরী এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই আদালত এর আগে নওশাবাকে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে কাজী নওশাবার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল পুলিশ। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা হলেন মহানগর পুলিশের উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই বিকাশ কুমার পাল।
আবারও রিমান্ড চাওয়ার কারণ হিসেবে আদালতে বলা হয়, নওশাবার সঙ্গে আর কার কার যোগাযোগ আছে তাদের মেইল আইডি আর কিছু বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, নওশাবা’র বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় গত ৫ আগস্ট র্যাব-১ এর ডিএপি আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ সালের ৫৭(২) ধারায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় বর্তমানে তিনি আটক রয়েছেন। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার থানার উপ-পরিদর্শক বিকাশ কুমার পাল।
ছাত্রদের নিরাপদ সড়ক চেয়ে করা যৌক্তিক এই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তৎপর হয়েছিল বিভিন্ন মহল। যা কোনো রাজনৈতিক দল এবং জনসাধারনের জন্য ভালো ফল বয়ে নিয়ে আসতে পারতো না। এদেরকে তাই শাস্তির আওতায় নিয়ে এসে সত্যটা উদ্ঘাটন করতে হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply