কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে জাহানারা বেগম (৪২) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তিনি ভৈরবের আনোয়ারা জেনারেল হাসপাতালের সামনে অবস্থিত বেবী বেকারির মালিক শাহাদাৎ হোসেন খানের স্ত্রী।
আজ বুধবার সকালে শহরের ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়া আবদুল লতিফ সড়কের নিজস্ব বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
প্রতিবেশী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ৯টার দিকে গোসলের পর জাহানারা বেগম বাড়ির আঙিনায় টানানো তারে কাপড় ছড়াতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হন। এ সময় তাঁর স্বামী শাহাদাৎ হোসেন খান পাশেই ছিলেন। তিনি ঘটনাটি বুঝতে পেরে দ্রুত বাড়ির বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন বন্ধ করে দেন। পরে স্ত্রীকে উদ্ধার করে স্থানীয় আনোয়ারা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহানারাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গৃহবধূর শোকাহত স্বামী শাহাদাৎ হোসেন খান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘গোসলের কাপড় বাসার উঠানের তারে টানানোর সময় আমার স্ত্রী হঠাৎ চিৎকার করে ওঠে। এ সময় আমি তাঁর কাছেই ছিলাম। ঘটনাটি বুঝে তৎক্ষণাৎ বাসার বিদ্যুতের প্রধান সুইস বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে কাটআউট খুলে ফেলি। কিন্তু মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে তার সারা শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
শাহাদাৎ হোসেন খান বলেন, গতকাল থেকে থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ার কারণে হয়তো বিদ্যুতের সরবরাহ লাইনের সঙ্গে উঠানে টানানো কাপড় শুকাবার তারে বিদ্যুৎ সংযোগ ঘটে থাকতে পারে বলে তিনি ধারণা করেন।
নিহত জাহানারা বেগম চার সন্তানের জননী। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিনাই গ্রামের আবদুল হাই মিয়ার মেয়ে। তাঁর শ্বশুরবাড়ি সেখানকার চানপুর গ্রামে।
শাহাদাৎ হোসেন খান দীর্ঘদিন ধরে ভৈরব শহরে থেকে বেকারি ব্যবসা করছেন। শাহাদাৎ-জাহানারা দম্পতি ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়ার আবদুল লতিফ সড়কে নিজস্ব বাড়ি তৈরি করে বসবাস করে আসছিলেন। জাহানারাকে তাঁর বাবার বাড়ি এলাকায় দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।
এই দুর্ঘটনার খবর শুনে ভৈরব পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট ফখরুল আলম আক্কাছ, স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর দ্বীন ইসলাম মিয়া শাহাদাৎ হোসেন খানের বাড়ি ছুটে যান। সান্ত্বনা জানান মরহুমার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান এ বিষয়ে জানান, পারিবারিকভাবে ঘটনাটির খবর দেওয়া হলে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে খবর নিয়েছি। নিহতের স্বামী শাহাদাৎ হোসেন বিনা ময়নাতদন্তে লাশ দাফন করতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন। অনুমতি পেলে লাশ দাফন করতে আইনি সমস্যা থাকবে না।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply