বাজারে ইলিশ যাচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। এজন্যে অনেকটা কম দরেই ক্রেতারা কিনতে পারছেন ইলিশ।
তবে আর মাত্র আট দিন পাওয়া যাবে ইলিশ মাছ। এরপরই ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিনের জন্য বন্ধ থাকবে দেশের ৩৭ জেলার সাত হাজার কিলোমিটার নদীতে মাছ ধরা। এই ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি, বাজারজাত, মজুতসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ইলিশের মা মাছ রক্ষা এবং ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতেই প্রতি বছর এই সময়ে ইলিশ ধরা বন্ধ রাখা হয়। অন্য বছরের তুলনায় এ বছরও এই সময় ১৫ দিন থেকে বাড়িয়ে ২২ দিন করা হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় টাক্সফোর্সের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ইলিশ মূলত লোনা পানির মাছ। কিন্তু ডিম ছাড়ার আগে নদীর মিঠা পানিতে আসে ঝাঁকে-ঝাঁকে ইলিশ। একটি মা-ইলিশ সর্বনিম্ন দেড় লাখ ও সর্বোচ্চ ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম দেয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ধরে গত বছর আশ্বিন মাসের প্রথম চাঁদের পূর্ণিমার দিন এবং এর আগের তিন দিন ও পরের ১১ দিনসহ মোট ১৫ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। আর এ বছর আশ্বিন মাসের প্রথম চাঁদের পূর্ণিমার দিন এবং এর আগে চার দিন ও পরের সতের দিনসহ মোট ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় পার হওয়ার পরও মা ইলিশ সমুদ্রে ফিরে যাওয়ার পথে ধরা পড়ে। এ জন্যই এ বছর সময় সাত দিন বাড়িয়ে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকছে। এ সময়ে ইলিশ ধরা ঠেকাতে অভিযান চালানো হবে। সরকারের নির্দেশ অমান্য করলে শাস্তি অবধারিত বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।’
তিনি বলেন, ‘এবার ইলিশ রক্ষায় সচেষ্ট থাকবে সরকার। অবৈধভাবে জাটকা নিধন রোধে কঠোর থাকার পাশাপাশি জেলেদের পর্যাপ্ত সহায়তা দেওয়া হবে। জাটকা নিধন রোধে ইলিশ ধরা জেলেদের জন্য ভিজিএফের মাধ্যমে খাদ্যদ্রব্য সরবরাহের সময় বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাসহ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে জাটকা মৌসুমে নদীতে ইলিশ মাছ ধরা অনেক কমে যায়। এর ফলেই এ বছর ইলিশের উৎপাদন যথেষ্ট বেড়েছে।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ১০ বছর আগেও দেশের মাত্র ২১টি উপজেলার নদীতে ইলিশ পাওয়া যেত। এখন ইলিশ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের ১২৫টি উপজেলার নদীতে। বিশ্বের মোট ইলিশের ৭৫ শতাংশই উৎপাদন হচ্ছে বাংলাদেশে। বাকি ইলিশ উৎপাদিত হয় প্রধানত ভারত ও মিয়ানমারে। আর দেশের নদীতে ধরা পড়া মোট মাছের ১১ শতাংশই ইলিশ।
প্রশাসনিক উদ্যোগ এবং সচেতনতার কারনেই এ বছর তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে ইলিশ। তবে এই উদ্যোগ অব্যহত রাখতে হবে। তবেই প্রতি বছর ইলিশের যোগান বাড়বে, দাম চলে আসবে সাধারনের হাতের নাগালে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply